করোনা তাণ্ডবে দেশ এখন দ্বিতীয় লকডাউনে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে বিভিন্ন ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান। তবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানকে অনলাইনে নিয়ে আসতে পারলে আর্থিক লোকসান কমবে। লকডাউনের মধ্যে বাড়বে নিত্য নতুন কর্মসংস্থান। একই সঙ্গে তৈরি হবে ঘরে বসে আয় করার সুযোগ।

ঘরে বসে অনলাইনে ব্যবসায় করার বেশ কিছু নিয়ম নীতি আছে। বিশেষ করে ই কমার্স ও এফ কমার্স নিয়ে টুকিটাকি ধারণা ছাড়াই এ ব্যবসায় নেমে পড়া বিপদজনক। তাই অনলাইনে ব্যবসায় করার আগে এ সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকতে হবে। চলুন জেনে নিই অনলাইনে ব্যবসায় করার কৌশল-

চাহিদা সম্পন্ন পণ্য বাছাই

অনলাইনে কোন পণ্যের চাহিদা বেশি, সেটা নির্বাচন করা জরুরি। বেশিরভাগ মানুষই পণ্য ও বাজার নিয়ে রিসার্চ করতে ভুল করে। সম্ভাবনা যাচাই করার কৌশল অনেকটা এরকম যে, আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে কোন মানুষ কি খুঁজছে এবং তাদের চাহিদা। যদিও কাজটা বেশ জটিল তবে ইন্টারনেট এই ধরণের বাজার গবেষণা খুবই সহজ করে দিয়েছে। যেমন: আপনি বিভিন্ন অনলাইন ফোরামে যান এবং দেখুন মানুষ কি ধরনের প্রশ্ন করে এবং কি ধরনের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে।

সুযোগ থাকলে কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করুন। রিসার্চ করে জানুন, মানুষ কি ধরনের কি-ওয়ার্ড বেশি অনুসন্ধান করে। প্রয়োজনে প্রতিযোগীদের সাইট ভিজিট করুন। জানার চেষ্টা করুন, তাদের গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ ও গ্রাহক চাহিদা অনুসন্ধানের জন্য কি কি করছে। অথবা কী ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে। প্রতিটি বিষয়কে নোট করুন। আপনি রিসার্চ করে যা যা পেলেন তা দিয়ে একটি পণ্যের লিস্ট তৈরি করুন।

বিক্রয়ের ক্ষেত্রে নতুনত্ব

অনেকেই অনলাইনে পণ্য বিক্রয় করছে। এরমধ্যে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান ক্রেতাদের কাছে গ্রহণযোগ্যতাও পেয়েছে। ফলে অনলাইনে ব্যবসায় করতে গেলে অবশ্যই নিত্য নতুন কৌশল অবলম্বন করতে হবে। যেমন-

১। পণ্যের আকর্ষণীয় শিরোনাম।

২। পণ্যের সঠিক বর্ণনা।

৩। সময়োপযোগী মূল্য ছাড়।

৪। সম্ভব হলে পণ্যের সঙ্গে গ্যারান্টি ও ওয়ারেন্টি যুক্ত করা।

৫। পণ্যের ছবির সঙ্গে ভিডিও রাখা।

৬। সঠিক পণ্য বিক্রয় করা।

পেইজ বা ওয়েব সাইট তৈরি করা

পণ্য নির্বাচন করার পর ব্যবসায়ের জন্য দুর্দান্ত একটি ওয়েব সাইট তৈরি করা সময়ের দাবি। তবে অনেকেই এখন ওয়েবসাইট তৈরির আগে ফেসবুকে ব্যবসায় করছেন। এক্ষেত্রে ফেসবুক পেইজ ওপেন করে সেখানে মার্কেটিং করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল মাথায় রাখা জরুরি-

১। পণ্যের বর্ণনা তথ্যবহুল করার চেষ্টা করুন করা

২। ওয়েব সাইটে ক্রেতার মন্তব্য জানানোর অপশন রাখুন।

৩। ফেসবুক পেইজে ব্যবসায় করলে বিজনেস ম্যানেজার ব্যবহার করে ব্যবসায় পরিচালনা করুন।

৪। পেইজে নিয়মিত পণ্যের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করুন।

৫। ক্রেতাদের মন্তব্য যুক্ত করুন।

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিন

অনলাইন ব্যবসা করতে গেলে ডিজিটাল মার্কেটিং ছাড়া সফলতা সম্ভব নয়। আপনি যদি পণ্যের সেল বৃদ্ধি করতে চান এবং ব্যবসায়কে দ্রুত প্রসার করতে চান তাহলে, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের বিকল্প কোন কিছু নেই।

দ্রুত ডেলিভারির ব্যবস্থা করা

অনলাইন ব্যবসায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ডেলিভারি। পণ্য ঠিকঠাক মত ডেলিভারি না করতে পারলে ক্রেতাকে আকর্ষণ করা সম্ভব হবে না। ফলে ব্যবসায় নামার আগেই ভালো মানের কুরিয়ার সার্ভিস বা ডেলিভারির সঙ্গে যুক্ত এমন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে।

এবং আরও...

অনলাইন ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে নতুন নতুন প্রযুক্তি নিয়ে যারা ব্যবসায় নামবেন, তাঁদের সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। বিশেষ করে  শিক্ষা, কৃষি, স্বাস্থ্য ইত্যাদি খাতে যারা প্রযুক্তি সংশ্লিষ্ট ব্যবসা শুরু করবেন, তাঁরা ভালো করবেন। ফ্যাশন বা প্রসাধনী শিল্পে অগমেন্টেড বা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার গ্রাহকদের বেশি আকৃষ্ট করবে। অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় প্রযুক্তির ব্যবহার বা হলোগ্রামের সংযোজন ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানগুলোকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলবে দর্শক ও অংশগ্রহণকারীদের কাছে। যারা নতুনভাবে উদ্যোক্তা হতে চাচ্ছেন, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে তাঁরা তাঁদের উদ্যোগে একটি নতুন মাত্রা যোগ করতে পারেন।