কাজী সোনিয়া রহমান। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কৃষি, মৎস্য ও গবাদিপশু পালন আরও গতিশীল করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। বর্তমানে কর্মরত আছেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) উপ-পরিচালক হিসেবে। পেশাজীবনের পাশাপাশি কাজ করছেন তরুণদের কর্মসংস্থান নিয়েও। সম্প্রতি ঢাকা পোস্টের মুখোমুখি হয়েছেন তিনি-

ঢাকা পোস্ট: কম্পিউটার বিজ্ঞানে পড়াশোনা করে পল্লী উন্নয়নে কাজ করছেন। শুরুর গল্পটা শুনতে চাই।

কাজী সোনিয়া রহমান:  কম্পিউটার বিজ্ঞানে পড়াশোনা শেষে পল্লী উন্নয়নে কাজ করা আমার জন্য সত্যিকার অর্থেই চ্যালেঞ্জ ছিল। তবে অল্প দিনের মধ্যেই নিজেকে নতুন পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছি। বার্ডে প্রথমে উন্নয়ন শাখায় কাজ করি। সেখানে দফতর ও ল্যাবের কম্পিউটার সেবা, নেটওয়ার্কিং, সার্ভার ম্যানেজমেন্ট, ওয়েব পোর্টাল ম্যানেজমেন্টসহ ইন্টারনেট সেবার সমন্বয় করতে হয়েছে। পরবর্তীতে আমি এমবিএ সম্পন্ন করি। এরপর বার্ডের প্রকল্প ভুক্ত বেশ কয়েকটি পণ্যের বিপণন নিয়ে কাজ করেছি। যদিও আমার বিশ্বাস, সামনের দিনগুলোতে পল্লী উন্নয়নে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার বহুগুণে বাড়বে। এমনকি আমরা একটি অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপ করার চিন্তা ভাবনা করছি।

ঢাকা পোস্ট:  বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়নের কার্যক্রম সম্পর্কে যদি বলতেন-

কাজী সোনিয়া রহমান:  বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) মূলত প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও প্রায়োগিক গবেষণাধর্মী একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির সূচনালগ্ন থেকেই একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ড. আখতার হামিদ খানসহ বেশ কয়েকজন মেধাবী গবেষক এর জন্য কাজ করে আসছেন। বর্তমানে আমরা সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের কর্মকর্তা, ছাত্র-ছাত্রী, স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি, গ্রাম সংগঠনের প্রতিনিধি এবং সেচ্ছাসেবী সংস্থায় কর্মরত ব্যক্তিদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদান করে আসছে। বছরে গড়ে ১২০টি প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করছে বার্ড। ইতোমধ্যে পল্লী উন্নয়ন সংক্রান্ত ৩০টি মডিউল প্রণয়ন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এ মডিউলের উপর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিভিন্ন প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে আসছেন। এছাড়াও দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এ পর্যন্ত ৭১২টি গবেষণা পরিচালনা করছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমান সরকারের ‌‘আমার গ্রাম আমার শহর’ প্রকল্পের জন্যও কাজ করছে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি। এ প্রকল্পের অধীনে শিক্ষা, শস্য উন্নয়ন, মৎস্য চাষ, গবাদি পশু হাঁস-মুরগি পালন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, নারী ও শিশু উন্নয়ন, পরিবেশ সুরক্ষা, আইন শৃঙ্খলা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন, দারিদ্র্য হ্রাসকরণ ও সুশাসনের বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে।

ঢাকা পোস্ট : শুনেছি পেশাগত জীবনের পাশাপাশি তরুণদের জন্যও কাজ করছেন...

কাজী সোনিয়া রহমান : আমি বেশ কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি, তরুণদের উচিত বিভিন্ন ধরনের ইতিবাচক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকা। এরমধ্য দিয়ে যোগাযোগ দক্ষতা, ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বাড়ায়, সহনশীলতা ও শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হয়। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে শিক্ষাগত জীবন ও ক্যারিয়ার গঠনে। তাই আমি বিভিন্ন ধনের সংগঠনে যুক্ত থেকে তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করি।

ঢাকা পোস্ট: তরুণ চাকরী প্রার্থীদের জন্য কোন পরামর্শ?

কাজী সোনিয়া রহমান : আমি ব্যক্তিগতভাবে নারীর অগ্রযাত্রায় অবদান রাখতে চাই। তবে চাকরি প্রার্থীদের একমাত্র কাজ হলো নিজেকে তৈরি করা। বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি যোগাযোগ দক্ষতা, ইংরেজি ও বাংলায় নির্ভুল লেখার দক্ষতা গড়ে তুলতে হবে। এখনতো নিয়মিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জব ফেয়ার হচ্ছে। এসব জায়গায় যেতে হবে। এভাবে এগিয়ে গেলে পড়াশোনা শেষে চাকরি পাওয়া সহজ হবে। আরেকটি বিষয় মনে রাখতে হবে, ভালো সিভি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে। যার সিভি যত ভালো, চাকরি প্রতিযোগিতায় তিনি তত এগিয়ে থাকবেন।