ছবি : সংগৃহীত

কড়া নাড়ছে ৪৬তম বিসিএস; ইতোমধ্যেই নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে নানা কার্যক্রম চালাচ্ছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। মূলত প্রতিবছরের নভেম্বরে একটি করে নতুন বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের যে ধারাবাহিকতা, এ বছরও সেটি বজায় রাখার চেষ্টা করছে পিএসসি। যার ফলে ৩০ নভেম্বর ৪৬তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে। এর আগের তিন বিসিএসের (৪৩, ৪৪ ও ৪৫তম) বিজ্ঞপ্তি নভেম্বর মাসে প্রকাশ করেছিল পিএসসি। 

মূলত তুমুল প্রতিযোগিতামূলক এই পরীক্ষাটি তিন ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমে প্রিলিমিনারি ২০০ নম্বরের নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নে এরপর ৯০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা এবং শেষে ২০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা। তাই প্রথম ধাপ প্রিলিমিনারি ভালো করার জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি শুরু করা নিঃসন্দেহে ভালো। কেননা দেশের সকল প্রতিষ্ঠানের এমনকি বিদেশের বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা চাকরিপ্রার্থীরাও এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকেন। শীর্ষ মেধাবীদের সাথে প্রতিযোগিতা করে কাঙ্ক্ষিত চাকরি পাওয়ার জন্য সঠিক নিয়মে পরিকল্পনামাফিক প্রস্তুতি নেওয়ার বিকল্প নেই।

প্রিলিমিনারিতে একেক বিষয়ে নম্বর বণ্টন একেক রকম। নম্বরে ভিন্নতা থাকলেও গুরুত্বের দিক দিয়ে সব বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পাস করতে হলে সব বিষয়ে জ্ঞান রাখতে হবে। এ ছাড়া প্রিলিমিনারিতে বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি ভালো থাকলে লিখিত পরীক্ষায়াও সুফল পাওয়া যায়। বিসিএসে নয়টি বিষয় থেকে প্রশ্ন আসে। বিষয়গুলো হচ্ছে- বাংলা ভাষা ও সাহিত্য(৩৫ নম্বর), ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য (৩৫ নম্বর), গাণিতিক যুক্তি (১৫নম্বর) ও মানসিক দক্ষতা (১৫ নম্বর), বিজ্ঞান কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি (৩০ নম্বর), সাধারণ বাংলাদেশ বিষয়াবলি (৩০ নম্বর), আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি(২০ নম্বর), ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা (১০ নম্বর), নৈতিকতা মূল্যবোধ ও সুশাসন (১০ নম্বর)। 

বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতির জন্য করণীয়

ইংরেজি ব্যাকরণ ও সাহিত্য 

ইংরেজি সাহিত্য যেহেতু লিখিত পরীক্ষায় আসে না, তাই ইংরেজি সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ লেখকের সাহিত্যকর্মগুলো পড়লেই হবে। একটু কৌশল অবলম্বন করলে ইংরেজি সাহিত্যে ৮/৯ নম্বর পাওয়া সম্ভব। ইংরেজি ব্যাকরণ ও শব্দ ভাণ্ডার যত বেশি জানা থাকবে, ফ্রি হ্যান্ডরাইটিং তত বেশি ভালো হবে।

বাংলা ভাষা ও সাহিত্য

 প্রিলিমিনারিতে বাংলায় ভালো প্রস্তুতি থাকলে লিখিত পরীক্ষায়ও সুবিধা পাওয়া যায়। ব্যাকরণের অনেক বিষয় থাকে, যেখান থেকে প্রশ্ন বেশি আসে, আবার অনেক বিষয় থেকে প্রশ্ন কম আসে। গত বছরের প্রশ্নগুলো থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাছাই করে সেগুলো বেশি পড়তে হবে।  যেমন সন্ধি, সমাস, বানান, সমার্থক শব্দ, পরিভাষা, ধ্বনি, বর্ণ, বাক্য শুদ্ধি, পদ ও প্রকৃতি-প্রত্যয় ইত্যাদি। সাহিত্য অংশে রবীন্দ্রনাথ, কাজী নজরুল ইসলাম, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, প্রমথ চৌধুরি, বঙ্কিম, পঞ্চ পাণ্ডব, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাহিত্য বেশি জোর দিতে হবে। 

গাণিতিক যুক্তি 

অষ্টম, নবম–দশম শ্রেণির সাধারণ গণিত ও উচ্চতর গণিত বই থেকে সিলেবাস অনুযায়ী অধ্যায়গুলো শেষ করতে হবে। গণিতে অনুশীলনের বিকল্প নেই। যত বেশি অনুশীলন করবেন, তত ভালো করতে পারবেন। 

মানসিক দক্ষতা 

এই  অংশে প্রিলিমিনারি আর লিখিত পরীক্ষার সিলেবাস একই। যাদের গণিতে দুর্বলতা আছে, তারা মানসিক দক্ষতা অংশে জোর দিতে পারেন। এখানে প্রস্তুতি নিলে প্রিলি ও লিখিত পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়া তুলতে পরবেন। 

বিজ্ঞান এবং কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি

বিজ্ঞান এবং কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি অংশে নবম-দশম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান, পদার্থ, রসায়ন, জীববিজ্ঞান এবং উচ্চমাধ্যমিকের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বই থেকে সিলেবাসের সাথে মিল রেখে অধ্যায়গুলো পড়লে ভালো নম্বর পাবেন। 

বাংলাদেশ বিষয়াবলি

নবম–দশম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বই এবং মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান, অর্থনীতি, শিল্প, কৃষি, জনসংখ্যা, উপজাতি ও খেলাধুলা বিষয় পড়তে হবে। এছাড়া সাম্প্রতিক বিশ্বমণ্ডলে বাংলাদেশের অর্জন ও বাংলাদেশ সম্পর্কিত বিভিন্ন ঘটনায় বেশি জোর দিতে হবে। 

আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি 

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ–সম্পর্কিত বিভিন্ন ঘটনা, স্নায়ুযুদ্ধ, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক, অর্থনৈতিক সংগঠনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনগুলোর প্রতিষ্ঠার সাল, সদর দপ্তর ও সদস্য জানা জরুরি। এ ছাড়া জলবায়ু, সাম্প্রতিক বিভিন্ন যুদ্ধ, সংঘাত ও সংকট ইত্যাদি বিষয়গুলো বেশি করে পড়তে হবে।

ভূগোল, পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা 

এই অংশে নবম–দশম শ্রেণির ভূগোল ও পরিবেশ বই থেকে সিলেবাস দেখে পড়তে হবে। 

নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন 

বিগত বছরের বিসিএসের প্রশ্ন এবং বিভিন্ন সংস্থার অর্থ, জাতিসংঘ, আইএমএফ, এডিবির সুশাসনের মানদণ্ড, উপাদান, সূচকগুলো পড়লেই চার-পাঁচটি কমন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।