করোনায় কমছে হাতেকলমে প্রশিক্ষণ, বাড়ছে অনলাইন ইন্টার্নশিপ
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা করোনা মহামারির জন্য ২০২০ সালের মতো এ বছরও অনলাইনে ইন্টার্নশিপ করছেন। ফলে হাতেকলমে প্রশিক্ষণের সুযোগ ধীরে ধীরে কমে আসছে। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য সুখবর হলো চলতি বছরে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন মুখ খোঁজা হবে। বিশেষ করে প্রযুক্তিবিদ্যা, ফিন্যান্স ও ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জন্য চাকরিতে সম্ভাবনার দরজা খোলা রয়েছে। মহামারির কারণে অনেকেই ঘরে বসে অধ্যয়ন করছেন এবং তাদের মধ্যে সিংহভাগের হাতে রয়েছে গবেষণার কাজ।
জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার প্লেসমেন্ট সেল জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের চাকরির জন্য পুরো ইন্টার্নশিপ বড় একটি সুযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়টির প্লেসমেন্ট সেলের শিক্ষক রেহান সুরি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ঘরে বসে কাজ করার সুযোগ দিচ্ছে বেশিরভাগ কোম্পানি। খুব কম কোম্পানিই অফিসে অবস্থান করে ইন্টার্নদের কাজের ব্যবস্থা রাখছে।’
বিজ্ঞাপন
রেহান সুরি আরও বলেন, গত বছর চাকরির বাজারে সবচেয়ে বেশি ইন্টার্নশিপের সুযোগ ছিল। বিশেষ করে শিক্ষা ও প্রযুক্তি এবং আর্থিক পরিষেবা বিভাগে সুযোগ ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেক শিক্ষার্থী কনটেন্ট তৈরি ও ডিজিটাল মার্কেটিং এবং উন্নয়ন বিভাগে ইন্টার্ন করার সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে ম্যানুফ্যাকচারিং বিভাগে তেমন সুযোগ চোখে পড়েনি।
শ্রীরাম কলেজ অব কমার্সের প্লেসমেন্ট সেলের প্রধান সচিব সাঞ্চি আগারওয়াল বলেন, ইন্টার্নশিপের সংখ্যা এখন অনেক বেড়েছে। করোনা মহামারি ইন্টার্নশিপের পদ্ধতি সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়েছে। ইন্টার্নশিপ রিপোর্টগুলো এখন গবেষণার মতো হয়ে উঠেছে। আগে যেমন ইন্টার্নশিপের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেজেন্টেশনের ব্যবস্থা ছিল, সেটা এখন নেই।
বিজ্ঞাপন
দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম বিভাগের প্রধান কুমার আশুতোষ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের বিভাগে সবসময় শতভাগ প্লেসমেন্ট ছিল। গত বছর মহামারির কারণে ২০ ভাগ শিক্ষার্থী ঝরে যায়। মহামারিতে দর্শনীয় স্থানগুলো অনেক বড় ধাক্কা খায় এবং শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন এবং ইন্টার্নশিপের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।’
দিল্লী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শিবম আগারওয়াল বলেন, ‘মাত্র ২-৩ জন শিক্ষার্থী ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করতে পেরেছেন। বর্তমানে উদীয়মান কোম্পানিগুলোই ফ্রেশারদের চাকরির ব্যবস্থা করছে।’ জামিয়া মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর আহমেদ আজিম তার কোম্পানিতে ইন্টার্নশিপের ‘সীমিত সুযোগ’ থাকায় ক্ষমা চেয়ে নেন। তিনি বলেন, ‘জামিয়া অ্যালামনাইয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং কোম্পানিটিতে ইতোমধ্যেই অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা করেছেন।
জামিয়া মিডিয়ায় ইন্টার্ন করা সাংবাদিকতা বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি এখানে শুধু কনটেন্ট তৈরির সুযোগ পেয়েছি। তবে সেটি আমি করতে চাই না।’
চলতি মাসে ‘করোনা মহামারির প্রতিকূল সময়ে ক্যারিয়ারের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক চাকরি ও ইন্টার্নশিপ মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলার সংগঠক আনিশা ওভ্রাই মাদান বলেন, ‘নন-আইআইটি-ডি শিক্ষার্থীদের জন্য যেকোনো বিভাগে চাকরি ও ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা রয়েছে। চলতি বছরে আমরা আইআইটি ছাড়াও অন্য শিক্ষার্থীদের সুযোগ দিতে চাই।’
দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া অবলম্বনে এইচএকে/আরআর