হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। চলমান মহামারিতে ঘরবন্দী হয়ে পড়েছেন কর্পোরেট দুনিয়ার মানুষজন। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টুইটার ও সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগলসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা কাজ করছেন ঘরে বসেই। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ মিটিংও হচ্ছে ভিডিও কনফারেন্সে। 

২০২০ সালে আউল ল্যাব ও গ্লোবাল ওয়ার্ক-প্লেস অ্যানালিটিক্সের এক জরিপে উঠে এসেছে, ৮১ শতাংশ চাকরিজীবী মনে করছেন, করোনা পরবর্তী সময়েও ঘরে বসে কাজের সহায়তা পাবেন। তার মধ্যে ২৯ শতাংশ বাড়তি সহযোগিতার আশা করছেন। 

জরিপে আরও দেখা যায়, চলমান করোনা মহামারির কারণে ঘরে বসে কাজ করে ৭৭ শতাংশ চাকরিজীবী খুশি রয়েছেন। অনেকে আবার ঘরে বসে কাজ করার সুবিধা নিতে চাইছেন সবসময়। গ্লোবাল ওয়ার্ক-প্লেস অ্যানালিটিক্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের শেষ নাগাদ ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ মানুষ সপ্তাহের বেশিরভাগ দিন ঘরে বসে কাজ করবেন। 

দীর্ঘমেয়াদী সময়ে ঘরে বসে কাজ করার প্রস্তুতি কেমন হওয়া উচিত? 
ঘরে বসে কাজ করার জন্য নিয়োগকর্তাকে অবশ্যই কিছু মানদণ্ড রাখতে হবে। এসব মানদণ্ডের ভিত্তিতেই তিনি নিজের ইচ্ছা ও প্রয়োজনের সামঞ্জস্য করতে পারেন। সেই সঙ্গে অফিসে নিয়োগ দেওয়া কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জেনে নেওয়া জরুরি, তারা কোন দিনগুলোতে ঘরে বসে কাজ করতে চান। তাছাড়া অফিসে নিযুক্ত কর্মকর্তাদের নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী সময়ে ঘরে বসে কাজ করার জন্য কিছু বিষয় ওয়াকিবহাল থাকা জরুরি- 

১. ঘরে বসে কাজ করার ক্ষেত্রে কর্মকর্তাদের কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না সেদিকে নজর রাখতে হবে। সর্বোপরি তাদের কাজ পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন করতে হবে। 
২. অধীনস্থরা যাতে মনোবল না হারান সে কারণে সাহস যোগাতে হবে। 
৩. নৈতিকভাবে কর্মকর্তাদের মূল্যায়ন করতে হবে। 
৪. ঘরে বসে কাজ করার ফলে অফিসের অনেক খরচ কমে যায়। তাই খরচ যাতে না বাড়ে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। 
৫. গ্রাহক সেবা ও ব্যবসার মুনাফা যে খাতে বেশি, সে খাতকে অগ্রাধিকার দিন। 
৬. কাজের গতি ধরে রাখতে সহায়তা করুন। 

ঘরে বসে কাজ করার ক্ষেত্রে যেসব পরিকল্পনা প্রণয়ন করবেন 
দীর্ঘমেয়াদী সময়ের জন্য ঘরে বসে কাজ করার ক্ষেত্রে অফিসের মানবসম্পদ নীতিতে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হবে। বিশেষ করে নিউ নরমাল জীবনধারা সম্পর্কে অধীনস্থদের উৎসাহ দিতে হবে। এছাড়া আরও বেশি কিছু বিষয় নজর দিতে হবে-

১. সাংগঠনিক মূল্যবোধ কীভাবে শক্তিশালী করা যায়? 
২. কীভাবে অধীনস্থ কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছানো যায়? 
৩. কতক্ষণ সময় অধীনস্থরা কাজ করবেন? 
৪. তাদের প্রয়োজনের প্রতি সজাগ থাকতে হবে। 

দীর্ঘমেয়াদী সময়ে ঘরে বসে কাজ করার ক্ষেত্রে যা করতে হবে-
১. অধীনস্থদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন এবং যেকোনো সমস্যায় তাদের পাশে থাকুন। 
২. তাদের সঙ্গে সৌহার্দ্য বজায় রাখুন। 
৩. আস্থা-ভাজন হোন এবং কাজের পরিবেশ তৈরি করুন। 
৪. কাজের মান ভালো রাখুন। 
৫. অধীনস্থদের কেউ একাকিত্ববোধ করলে তাকে সময় দিন। তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করুন। 
৬. প্রয়োজনে মাঝেমধ্যে অফিসে কাজ করুন। 
৭. প্রতিবন্ধকতা, ফলাফল এবং সংঘর্ষের বিষয়টি বিবেচনা করুন। 
৮. কাজের সময় ঠিক করুন এবং ভারসাম্য রাখুন। 

এইচএকে/আরআর