সম্প্রতি ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টিলিজেন্স (এনএসআই) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। প্রতিবারই কয়েক লাখ চাকরি প্রত্যাশী এনএসআইতে আবেদন করেন। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগটি সেই চাহিদার কথা মাথায় রেখে এবারও বিভিন্ন পদে ১ হাজার লোক নিয়োগ দেবে। তবে পদের চেয়ে আবেদনকারীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই নিয়োগ পরীক্ষায় থাকবে তুমুল প্রতিযোগিতা। তাই প্রস্তুতিটাও হওয়া চাই যুতসই। 

বেসিক স্ট্রং হলে সাকসেস রেটে আপনিই এগিয়ে থাকবেন। মনে রাখবেন এনএসআই একটি সন্মানজনক চাকরি। পরিশ্রম আর কৌশলী হয়ে পড়াশোনা করলে ভালো কিছু করা সম্ভব।

সঠিক দিকনির্দেশনা ও কৌশলী হয়ে পড়াশোনা করলে এখানেও ভালো করা সম্ভব। তাহলে চলুন জেনে নেই এনএসআই পরীক্ষার আদ্যোপান্ত।

এনএসআই নিয়োগ পরীক্ষা তিন ধাপে গ্রহণ করা হয়। প্রাথমিক ভাবে নেওয়া হয় এমসিকিউ বা প্রিলিমিনারি, দ্বিতীয় ধাপে নেওয়া হয় লিখিত পরীক্ষা। এমসিকিউ ও লিখিত পরীক্ষায় উর্ত্তীণদের নেওয়া হবে মৌখিক বা ভাইভা পরীক্ষা। তবে ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবহারিক ও মেডিকেল টেস্টও নেওয়া হতে পারে।

এমসিকিউ পরীক্ষার হয় ১০০ নম্বরের। লিখিত পরীক্ষাতেও থাকে ১০০ নম্বর। মোখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর পরিবর্তণ হয়। এটি তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্টরা নিধারণ করেন। তবে বেশিরভাগ সময় মৌখিক পরীক্ষা ৩০ নম্বরের হয়ে থাকে।

এবার আসা যাক নিয়োগ পরীক্ষার সিলেবাস প্রসঙ্গে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক গ্রুপে ইদানিং এনএসআই নিয়োগ পরীক্ষার সিলেবাস নিয়ে আলোচনা করা হয়। বিষয়টি ভুল। আক্ষরিক অর্থে এনএসআই নিয়োগ পরীক্ষার কোন সিলেবাস নেই। তবে বিগত দিনের বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন এনালাইসিস করে প্রশ্নের মানবন্টন সর্ম্পকে প্রাথমিক ধারনা পাওয়া যায়। 

বিগত ৩ থেকে ৪ বছরের প্রশ্ন আমলে নিয়ে দেখা গেছে এমসিকিউ পরীক্ষায় ৭টি ক্যাটাগরিতে প্রশ্ন আসে। এরমধ্যে বাংলা, ইংরেজি, সাধারণ গণিত, সাধারণ জ্ঞান থেকেই আসে সিংহভাগ প্রশ্ন। এছাড়াও আইসিটি ও মানসিক দক্ষতার উপরের ৮ থেকে ১০টি প্রশ্ন আসতে পারে।

চলুন এক নজরে দেখে নেই বিষয়ভিত্তিক প্রশ্নের সংখ্যা-

১. বাংলা- ১০ থেকে ২০ টি প্রশ্ন আসে

২. ইংলিশ- ১০ থেকে ২০ টি প্রশ্ন আসে

৩. সাধারণ গণিত -১০ থেকে ১৫ টি আসে

৪. সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক )-  ৩৫ থেকে ৪০ টি প্রশ্ন আসে

৫. সাধারণ বিজ্ঞান-  ৩ থেকে ৫ টি আসে

৬. আইসিটি-  ৮ থেকে ১০ টি প্রশ্ন আসে

৭. মানসিক দক্ষতা- ১০টি প্রশ্ন আসে

প্রথমেই বলেছি, পদের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি আবেদনপ্রার্থী। ফলে প্রস্তুতি ঠিকঠাকমত না হলে সোনার হরিণটিও মিলবে না। বুদ্ধিমানের মত কাজ হবে, অযথা সময় নষ্ট না করে, এখনই পড়াশোনায় নেমে নেওয়া। এখন প্রশ্ন হতে পারে, যে পরীক্ষার সিলেবাসই নেই, সেখানে পড়াশোনা কিভাবে করবো। এর উত্তরও আছে।

উপরের নম্বর বন্টনের নিমিত্তে বিষয়ভিত্তিক পড়াশোনা করতে হবে। সে বিষয় যতটুকু গুরুত্ব দেওয়ার দরকার, সে বিষয়টি সেভাবেই গুরুত্ব দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। 

বাজারে বেশ কিছু গাইড বই পাওয়া যায়। অনেকেই মনে করেন, শুধু মাত্র গাইড বই পড়লেই চাকরি হয়ে হয়ে যাবে। কিন্তু না। বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ গণিতের জন্য মাধ্যমিকের পাঠ্যপুস্তক ভালো করে পড়লেই হবে। আর সাধারণ জ্ঞানের জন্য নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা পড়া বাঞ্চনীয়। একই সঙ্গে বিগত বছরের সব ধরনের প্রশ্নগুলো সমাধান করতে হবে। মাঝেমাঝে কিছু প্রশ্ন রিপিটও হয়।

১. বাংলা- বাংলার জন্য নবম ও দশম শ্রেণির বাংলা গ্রামার বই বা এমপি থ্রি জর্জ সিরিজের বাংলা দেখতে পারেন। ব্যাকরণের অংশটা ভালো করে পড়ুন।

২. ইংরেজি - Competitive Exam বা Master ইংরেচি বইটা দেখতে পারেন । বিগত সালের বিভিন্ন পরীক্ষায় আসা প্রশ্ন ভালো করে পড়ুন।

৩. সাধারণ গণিত ও মানসিক দক্ষতার জন্য শাহীন ম্যাথ বা যে কোন ম্যাথ এর বই দেখুন , বেসিক ম্যাথ গুলো ভালো করে দেখুন । মানসিক দক্ষতার চেয়ে গণিতের দিকটা বেশি গুরুত্ব দিন।

৪. সাধারণ জ্ঞান - রিসেন্ট যে কোন সাধারণ জ্ঞান এর বই পড়তে থাকুন, বিস্তারিত পড়ার জন্য আজকের বিশ্ব বা MP3 বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিকের যে কোন একটি বই অনুসরন করুন।

৫. সাধারণ বিজ্ঞান - বাজারের যে কোন একটি বই এর বেসিক অংশটুকু পড়ুন। সেটা ওরাকল বা MP3 বিজ্ঞানও হতে পারে।

৬. আইসিটি - এটা গুরুত্বপূর্ন ও সহজেই মার্ক পাওয়া যায়। অথবা  ‘self suggestion কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি’ বইটির প্রতিটি অধ্যায়ের শেষে ‘অটো সাজেশন’ ফিচার ও জব সল্যুশন ফিচার এই দুটি ভালো করে পড়ূন।

যারা এত বই না পড়ে শর্টকাটে পাশ করার চিন্তা করছেন তারা, যে কোন জব সল্যুশন, ডাইজেস্ট বা এনআসআই এর যে কোন বই নিয়ে পড়তে পারেন । 

তবে বেসিক স্ট্রং হলে সাকসেস রেটে আপনিই এগিয়ে থাকবেন। মনে রাখবেন এনএসআই একটি সন্মানজনক চাকরি। পরিশ্রম আর কৌশলী হয়ে পড়াশোনা করলে ভালো কিছু করা সম্ভব।