যুক্তরাষ্ট্রে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় ওয়ার্ক ফ্রম হোম থেকে অফিসে ফিরতে বলা হয়েছে কর্মীদের। এতেই বেঁকে বসেছেন ৫৮ শতাংশ কর্মী। তাদের দাবী, এক বছরের বেশি সময় ধরে ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’র সঙ্গে তারা অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। এছাড়া পরিবারকে সময় দেওয়ার সুযোগ ও অর্থ সাশ্রয়ের মতো বিষয় থাকায় অনেকেই নতুন পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। ফলে এই মুহুর্তে তাদের অফিসে ফেরার কোন যৌক্তিকতাও নেই।’ কেউ কেউ এবার এক পা বাড়িয়ে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার হুমকিও দিচ্ছেন।

এদিকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা অফিসে ফিরতে শুরু করেছেন। কিন্তু করোনার তাণ্ডব এখনো শেষ না হওয়ায় অনেকেই অফিসে গিয়ে কাজ করতে চাইছেন না। সম্প্রতি ইন্ডিয়া টাইমসের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই ওঠে এসেছে।

বেশিরভাগ মানুষ ঘরে বসে অফিসের কাজ করতে চান

সম্প্রতি গবেষণা সংস্থা ফ্লেক্সজব তাদের ২১০০ কর্মকর্তাকে নিয়ে একটি জরিপ করে। জরিপ শেষে দেখা যায়, মহামারির সময় হোম অফিস করায় বর্তমানে তারা অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন। এরমধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশ কর্মকর্তাই ঘরে বসে অফিসের কাজ করতে চান। 

বাকি ৩৩ শতাংশ কর্মকর্তা বলেছেন, সপ্তাহে অন্তত একদিন অফিসে কাজ করতে চান তারা। অপরদিকে মাত্র ২ শতাংশ কর্মী মনে করেন, অফিসে ফুল টাইম কাজ করা যেতে পারে।

হোম অফিস শেষ হলে চাকরি ছাড়ছেন অনেকে

গবেষণায় বলা হয়, হোম অফিস শেষ হলে ৫৮ শতাংশ কর্মকর্তাই চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন এবং তারা এমন চাকরি খুঁজছেন যেটি ঘরে বসেই করা যাবে। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে করোনা মহামারি চলার কারণে হোম অফিসে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন অনেকে। সে কারণে অফিসে গিয়ে কাজ করায় আগ্রহ হারিয়েছেন তারা। 

কেন চাকরি ছাড়ছেন?

জরিপে বলা হয়, বেশিরভাগ কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে চাকরি ছাড়ছেন। তারা ঘরে বসে কাজ করায় বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ৪৬ শতাংশ কর্মকর্তা করোনায় সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থেকে অফিসে গিয়ে কাজ করতে চাইছেন না। তারা কেবল ঘরে বসে কাজ করার পক্ষপাতী। সে কারণে হোম অফিস শেষ হয়ে গেলে তারা চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন। 

ঘরে বসে অফিসের কাজে আছে নানা চ্যালেঞ্জ

হোম অফিস করার ক্ষেত্রে একেক জন একেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। এর মধ্যে ৩৫ শতাংশ কর্মকর্তা ওভারটাইম কাজ করেছেন, ২৮ শতাংশ কর্মকর্তা অফিসের প্রতি ব্যাপকভাবে ক্ষুব্ধ, ২৮ শতাংশ হোম অফিসে কারিগরি সমস্যার মুখে পড়েছেন এবং ২৬ শতাংশ বলেন, হোম অফিস করতে গিয়ে তারা ইন্টারনেট সংযোগ ঠিকমতো পাননি। 

১৯ শতাংশ কর্মকর্তা হোম অফিস করতে করতে সামাজিক যোগাযোগের দক্ষতা হারিয়েছেন, ২৫ শতাংশ কর্মকর্তা হোম অফিসের সময় অন্যদের সঙ্গে কথা বলতে পারছেন না ও ২৪ শতাংশ কর্মকর্তা অবসাদগ্রস্ততায় ভুগছেন। 

উল্লেখ্য, ৫৬ শতাংশ কর্মকর্তা মহামারি শুরুর পর থেকে হোম অফিস করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৯ শতাংশের মানসিক স্বাস্থ্য বিপর্যস্ত রয়েছে। 

এইচএকে/আরআর