জহিরুল ইসলাম (কাজল)। পড়াশোনা করেছেন কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ৩৮তম বিসিএসে জায়গা করে নিয়েছেন পুলিশ ক্যাডারে। বর্তমানে সহকারী পুলিশ সুপার হিসেবে কর্মরত আছেন পুলিশ হেডকোয়ার্টারে। সম্প্রতি তিনি মুখোমুখি হয়েছেন ঢাকা পোস্টের। শুনিয়েছেন না বলা অনেক কথা।

ছেলেবেলার গল্প

-ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়াতে আমার ছেলেবেলা কাটিয়েছি। ছোটবেলা থেকেই শান্ত স্বভাবের ছিলাম। তবে নিত্য নতুন বিষয় সম্পর্কে আমার আগ্রহ তখন থেকেই। বলতে পারেন, ছোট থেকেই পড়ুয়া স্বভাবের ছিলাম।

‘বিসিএস দেব’, এই সিদ্ধান্ত কখন নিলেন?

- বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। এরমধ্যে একটি হলো, সামাজিক মর্যাদা। সমাজে একজন বিসিএস ক্যাডারের মূল্যায়ন ও প্রশাসনিক পদ মর্যাদার কথা চিন্তা করেই পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তাছাড়া আমার বড় ভাইয়ের উৎসাহ ও প্রেরণা তো ছিলই।

বিশাল সিলেবাস। প্রস্তুতি নিয়েছিলেন কীভাবে?

- আমি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী। শেষ বর্ষের পরীক্ষা দিয়েই বিসিএস কোচিংয়ে ভর্তি হই। শুরু করি নিয়ম করে পড়াশোনা। বিসিএসে প্রস্তুতির শুরুতেই ‌‘জব সল্যুশন’র প্রশ্ন এনালাইসিস করতে থাকি। ফলে বিষয়ভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ টপিক সামনে চলে আসে। সেগুলো বারবার পড়তে থাকি। তাছাড়া টপিক থেকে বারবার প্রশ্ন এসেছে, সেগুলো গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা শুরু করি। একই সঙ্গে আমার যেসব বিষয়ে দুর্বলতা রয়েছে, সেগুলো নিয়মিত অনুশীলন করেছি। পাঠ্য বইয়ের সঙ্গে সাপ্লিমেন্টারী বই সংগ্রহ করেছি। 

এছাড়াও সহায়ক বই, সংবাদপত্র-সাময়িকী নিয়মিত পড়েছি। বাংলা, ইংরেজি সাহিত্য, মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধান, মানচিত্র, গণিত ও বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নোট করে রাখতাম। কিছুক্ষণ পর পর সেগুলো রিডিং দিতাম। তবে ইংরেজি, বিজ্ঞান এবং ম্যাথে নিয়মিত সময় দিয়েছি।

বিসিএসের জন্য অনেকেই বিভিন্ন ধরনের বই পড়েন। আপনি কি কি বই পড়েছেন?

- বিসিএস নিয়ে বাজারে অনেক বই পাওয়া যায়। যেকোনো একটি কিনেই প্র্যাকটিস করা শুরু করা যেতে পারে। বিশেষ করে ওরাকল/এমপিথ্রি কিংবা একটা ডাইজেস্ট হতে পারে। বোর্ড বই নবম-দশম শ্রেণি ( পৌর নীতি, ভূগোল, ইতিহাস, বাংলা ব্যাকরণ, সাধারণ বিজ্ঞান, গণিত); একাদশ শ্রেণির পৌর নীতি, কম্পিউটার ও তথ্য প্রযুক্তি পড়তেই হবে। অষ্টম শ্রেণির গণিত ও বিজ্ঞান বই বাধ্যতামূলক নিয়মিত পড়তে হবে। 

এতেটা পথ পাড়ি দিয়েছেন। কার অনুপ্রেরণা সবসময় পাশে ছিল-

- আমার বড় ভাই। তিনি বেঁচে থাকলে খুব আনন্দিত হতেন। তিনি আমাকে সবসময় উৎসাহ দিয়েছেন। 

ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ে পুলিশে যোগ দিলেন। এই পেশায় এসে কীভাবে দেশের সেবা করতে চান?

- স্যাররা সবসময়ই বলেন, ‘পুলিশে যোগ দেওয়া সহজ, তবে সফলভাবে কাজ করে অবসরে যাওয়া কঠিন।’ মানে সব সময় প্রতিকূলতা ও ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। তবুও নিজেকে এমন অবস্থানে নিয়ে যেতে চাই, যেখানে মানুষের জন্য আরও বেশি কাজ করা সম্ভব। একটা স্বপ্ন নিয়ে পুলিশে যোগদান করেছি। মানুষের জন্য নিরাপদ ও সহজ সেবা নিশ্চিত করতে চাই।

নতুন যারা বিসিএস পরীক্ষা দিতে চায়, তদের জন্য কি পরামর্শ দিবেন?

- বোর্ড বই, নিউজ পেপার নিয়মিত পড়তে হবে। অবশ্যই বিসিএসের সিলেবাস ভিত্তিক পড়াশোনা করতে হবে। সম্ভব হলে কোচিং করা।