রাজধানীর পল্লবী থানায় দায়ের করা প্রতারণা মামলায় জামিন পেয়েছেন আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীর। সোমবার (২৮ মার্চ) অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।

এ দিন হেলেনা জাহাঙ্গীর ছাড়াও আরও চার জনকে জামিন দেন আদালত। তারা হলেন— হেলেনা জাহাঙ্গীরের আইপিটিভি জয়যাত্রা টেলিভিশনের মহাব্যবস্থাপক হাজেরা খাতুন, টেলিভিশনের সমন্বয়ক সানাউল্লাহ নূরী, প্রধান বার্তা সম্পাদক কামরুজ্জামান আরিফ ও স্টাফ রিপোর্টার মাহফুজুর রহমান।

তাদের মধ্যে হেলেনা, হাজেরা সানাউল্লাহ ও আরিফ আদালতে হাজির হয়ে এবং মাহফুজুর রহমান দীর্ঘদিন কারাগারে আছেন জানিয়ে তার আইনজীবী জামিন চান। পরে আদালত আবেদন মঞ্জুর করেন।

এছাড়া প্রতারণা মামলায় হেলেনাসহ চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ১৭ এপ্রিল দিন ধার্য করেন আদালত।

এ মামলায় গত বছরের ২১ নভেম্বর আদলতে অভিযোগপত্র দেন অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম।

ভোলা জেলা প্রতিনিধি আবদুর রহমান তুহিন গত বছরের ২ আগস্ট পল্লবী থানায় হেলেনা জাহাঙ্গীরসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে প্রতারণার এ মামলা করেন।

গত বছরের ২৯ জুলাই রাত ৮টার দিকে গুলশান-২ এ হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাসায় অভিযান চালায় র‌্যাব। দীর্ঘ চার ঘণ্টা অভিযান শেষে রাত ১২টার দিকে তাকে আটক করা হয় এবং পরে র‍্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আটকের পর তার প্রতিষ্ঠান জয়যাত্রা টেলিভিশন কার্যালয়েও অভিযান চালায় র‍্যাব।

ওই অভিযানের পর র‌্যাব জানায় জয়যাত্রা টেলিভিশন কোনো ধরনের বৈধ কাগজপত্র ছাড়া চলতো। হেলেনা জাহাঙ্গীর তার জয়যাত্রা টেলিভিশনের জন্য সারাদেশে প্রতিনিধি নিয়োগ করেছিলেন। প্রবাসী প্রতিনিধি নিয়োগের নামে তিনি অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। 

ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে মিথ্যাচার, অপপ্রচার ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও ব্যক্তিদের সম্মানহানি করার অপচেষ্টার অভিযোগে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয় ৩০ জুলাই।

জুলাই মাসে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামে একটি সংগঠনের পোস্টার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পোস্টারে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি হেলেনা জাহাঙ্গীর আর সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মনিরের নাম উল্লেখ করা হয়। ওই পোস্টার ছড়িয়ে পড়ার পর আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য পদ হারান হেলেনা জাহাঙ্গীর।

হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলোতে কয়েক দফায় তাকে রিমান্ডে নেয় পুলিশ।

তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন এবং টেলিযোগাযোগ আইনে গুলশান ও পল্লবী থানায় আরও পাঁচটি আলাদা মামলা করা হয়।

আদালত থেকে জামিন পেয়ে গত বছরের নভেম্বরে কারাগার মুক্তি পান হেলেনা জাহাঙ্গীর।

এসএসএইচ