বাংলাদেশি সংগঠন ‘নো পাসপোর্ট ভয়েস’-এর কো-ফাউন্ডার ব্যারিস্টার ফাতিমা ওয়ারিথা আহসানকে ট্রান্স সলিডারিটি অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে। সরল বিশ্বাসে নিবেদিত প্রাণ হয়ে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ার ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তাকে এ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) আন্তর্জাতিক ট্রান্সজেন্ডার দৃশ্যমানতা দিবসে ভারতের কলকাতার ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনের সহযোগিতায়  গরিমা গৃহ, এটিএইচবি তাকে এ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করে। অনুষ্ঠানে ভারতের ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনার নিক ল, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও প্রান্তকথার প্রতিষ্ঠাতা বাপ্পাদিত্য মুখার্জি, চলচ্চিত্র নির্মাতা অনিন্দিতা শর্বাধিকারী, তালাশের নির্বাহী পরিচালক আয়েশা সিনহা, নৃত্যশিল্পী এবং বিশিষ্ট সমাজকর্মী অলোকানন্দ রায় উপস্থিত ছিলেন।

অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে ব্যারিস্টার ফাতেমা ওয়ারিথা আহসান দক্ষিণ এশিয়ায় ট্রান্সজেন্ডার দৃশ্যমানতার গুরুত্ব, প্রচারণা ও সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায়ের বিভিন্ন বৈষম্য, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে আইন প্রণয়ন এবং আইন সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে ব্যতিক্রমীভাবে আন্তর্জাতিক ট্রান্সজেন্ডার দৃশ্যমানতা দিবস-২০২২ উদযাপন করেছে ‘নো পাসপোর্ট ভয়েস’।

সন্ধ্যায় ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবরে রূপান্তরিত নারীরা তাদের মনের অব্যক্ত কথা নিয়ে লেখা চিঠি জনসাধারণকে পড়ে শোনান। পরে চিঠি বেলুনে করে আকাশে উড়িয়ে দেন।

শুক্রবার নো পাসপোর্ট ভয়েসের উন্নয়ন কর্মকর্তা রূপান্তরিত নারী হো চি মিন ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন ‘আমরা যারা ট্রান্সজেন্ডার মানুষ আছি তাদের কথা বলার জায়গা, কথা শোনার মানুষের সংকটের কথা নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। পেটে ধরা জন্মদাত্রী মা, বাবা, বোন বা ভাই, প্রিয় মানুষ, বন্ধু, আত্মীয়, প্রতিবেশী, সমাজ সবকিছুই শুধুমাত্র লিঙ্গ পরিচয়ের কারণে আমাদের দূরে ঠেলে দিতে কুণ্ঠিত বোধ করেন না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ঘুরে বেড়াই, লড়াই করি, বাঁচি, গাই, নাচি। কিন্তু কত কথা আমাদের না বলা রয়ে যায়। হয়তো রাতে খেতে বসে মায়ের সঙ্গে বা পরিবারের মানুষের সঙ্গে সেসব গল্প বলার সুযোগ হয়ে ওঠে না। অথবা আমাদের অনেকের জীবনের পরিবর্তন, অনেক অনুপ্রেরণাদায়ক সেই পরিবর্তিত জীবনের গল্পও প্রিয় মানুষটিকে শোনানোর সুযোগ হয় না। আমরা চাপা থাকা না বলা কথাগুলো চিঠিতে লিখে সবাইকে পড়ে শুনিয়েছি। পরে সেই চিঠিগুলো আকাশের ঠিকানায় উড়িয়ে দিয়েছি।’

এমএইচডি/ওএফ