ভুল বিচারের শিকার হওয়া কোন ব্যক্তি উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণ চাইতে পারবেন বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রোববার গাজীপুরের এক শিশু হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জনকে খালাসের পূর্ণাঙ্গ রায়ে বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, বিচারিক আদালত শংকর দেবনাথ ও জাকির হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। হাইকোর্ট তাদের খালাস দিয়েছেন। আজ খালাসের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন।

রায়ে বলা হয়েছে, হাইকোর্ট মনে করেন বিচারিক আদালতে এই মামলার ভুল বিচার হয়েছে (মিসক্যারেজ অব জাস্টিস)। এই বিচারের কারণে ভিকটিম উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণ চাইতে পারবেন। মামলায় শংকর চন্দ্র দেবনাথ এবং মো. জাকির হোসেনকে ভুল বিচারের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ভুল বিচারের শিকার হওয়ার কারণে তারা ক্ষতিপূরণ চাইতে পারবেন এবং সরকারের কাছে তারা পুনর্বাসন চাইতে পারবেন।

এই মামলায় ভুল বিচার প্রসঙ্গে আইনজীবী বলেন, হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া শিশুর মাথা পাওয়া গেছে কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকায়। অথচ  শরীর পাওয়া গিয়েছে গাজীপুর জয়দেবপুরের শালবনের ভিতরে। পোস্টমর্টেম রিপোর্টে বলা হয়েছে, পাওয়া যাওয়া মাথাটি ৮ থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুর। অন্যদিকে শালবনের ভিতরে পাওয়া শরীরের অংশটি ১৪ বছর বয়সী একজনের।

অন্যদিকে আইন অনুযায়ী কাউকে গ্রেপ্তারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে সোপর্দ না করে দুই থেকে তিন পরে আদালতে আসামিকে উপস্থাপন করা হয়েছে। এটা স্পষ্টভাবে আইনের লঙ্ঘন। এসব কারণে আদালত অভিমত দিয়েছেন এটা একটি ভ্রান্তিমূলক বিচার।

এর আগে গত জানুয়ারি মাসে ভাওয়ালের শালবনে নিয়ে এক শিশুকে হত্যা মামলার দায়ে বিচারিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জনকে খালাস দেন হাইকোর্ট।

বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

ওইদিন আইনজীবী শিশির মনির বলেছিলেন, ডেথ রেফারেন্স মামলায় ২ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে কেন পুলিশরা সাক্ষ্য দিতে আসল না, এজন্য তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আইজিপিকে নির্দেশ দিয়েছেন।

২০১৬ সালের মার্চে মো. আনোয়ার হোসেন ওরফে মো. রাজিব ওরফে গোলাম রব্বানি ওরফে শংকর চন্দ্র দেবনাথ এবং মো. জাকির হোসেনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন ঢাকার একটি আদালত।

নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি আসামি হাইকোর্টে আপিল করেন।

এমএইচডি/আইএসএইচ