হাইকোর্ট বলেছেন, ‘বড় লোক হওয়ার এতই উচ্চাকাঙ্খা যে চাল নেই চুলো নেই কিন্তু এরপরেও নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান বানিয়ে ব্যাংক থেকে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। এ ঋণের সুবিধাভোগী হলেন হলমার্কের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম ও এমডি তানভীর মাহমুদ। এ কারণেই ওই ঋণের দায় এমডির পাশাপাশি জেসমিন ইসলামকেও নিতে হবে। কারণ কাগজে-কলমে উনি কোম্পানির চেয়ারম্যান।’

বুধবার (২২ জুন) দুর্নীতির মামলায় হলমার্কের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামের জামিন প্রশ্নে রুল শুনানিতে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

তবে জামিন শুনানিতে জেসমিনের সিনিয়র আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী আদালতে বলেন, মাই লর্ড যে কোনো শর্তে জামিন চাই। যদি শর্ত দেন প্রতিদিন হাইকোর্টের বারান্দায় এসে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে সেটাও করব। কিন্তু জামিন চাই। জামিন না দিলে উনি মারা যাবেন। 

আরও পড়ুন : হলমার্কের জেসমিনের জামিনের বিষয়ে রায় ৩০ জুন

তিনি বলেন, এই নারী পাঁচ বছর ধরে কারাগারে। হলমার্কের এমডি তানভীর মাহমুদের স্ত্রী হওয়ার কারণে তার আজ এই অবস্থা। তাকে তো চেয়ারম্যান করা হয়েছে। কিন্তু তার কোনো কাজ ছিল না।

জবাবে দুদক আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, আনোয়ারা এবং ম্যাক্স শিপিং স্পিনিং মিল নামে দুটি নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান বানিয়ে ৮৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। এখন বলছেন জেসমিন ইসলাম কিছুই জানেন না। অথচ এ ঋণের সুবিধাভোগী তারাই। 

তিনি বলেন, তিন বছর আগে জামিন বাতিলের আদেশে মামলার এজাহার পর্যালোচনা করে আপিল বিভাগ বলেছে- জেসমিনের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের এ পর্যবেক্ষণ দেওয়ার পর আসামিকে জামিন দেওয়ার সুযোগ নাই। শুনানি শেষে হাইকোর্ট ৩০ জুন জামিন প্রশ্নে জারি করা রুলের ওপর রায় দেওয়ার জন্য দিন ধার্য রেখেছেন।

ভুয়া এলসির বিপরীতে জনতা ব্যাংকের করপোরেট শাখা থেকে ৮৫ কোটি ৮৭ লাখ ৩৩ হাজার ৬১৬ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৬ সালে মতিঝিল থানায় মামলা করে দুদক। এ মামলায় হলমার্কের এমডি তানভীর মাহমুদ ও তার স্ত্রী চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলামসহ ব্যাংক কর্মকতাদের আসামি করা হয়। মামলার পরই জেসমিনকে আটক করে র‌্যাব। এ মামলায় ২০১৯ সালের মার্চ মাসে জেসমিন ইসলাম হাইকোর্ট থেকে জামিন পান। ওই বছরের ১৬ জুন আপিল বিভাগ সেই জামিন বাতিল করে তাকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর থেকে জেসমিন ইসলাম কারাগারে রয়েছেন। এ মামলায় পুনরায় জামিন চান তিনি। জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। 

এমএইচডি/এসএম