রেলওয়ের তিন কর্মকর্তাকে উদ্দেশ করে হাইকোর্ট বলেছেন, রেলে এত অব্যবস্থাপনা কেন থাকবে? কেন টিকিটে কালোবাজারি হবে? কেন মানুষ ট্রেনের ছাদে যাবে? আপনারা কি রেলকে গ্রাস করতে চাইছেন? এ অবস্থা চলতে পারে না।

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।

আরও পড়ুন: রেলের অব্যবস্থাপনা : মহিউদ্দিন রনির অভিযোগ তদন্তে কমিটি

এর আগে বুধবার (২০ জুলাই) রেলওয়ের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে আন্দোলনরত ঢাবি শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনির অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে খোঁজ নিতে রাষ্ট্রপক্ষকে বলেছিলেন হাইকোর্ট। এরপর বৃহস্পতিবার রেলওয়ে ও সহজ ডটকমের তিন কর্মকর্তা আদালতে আসেন। 

এদিন শুনানির শুরুতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক আদালতকে বলেন, হাইকোর্টকে সম্মান দেখিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ মহিউদ্দিন রনির স্মারকলিপিতে থাকা দাবিগুলো তদন্তে কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। রেলওয়ের কর্মকর্তারাও হাইকোর্টে হাজির হয়েছেন। এ পর্যায়ে রেলওয়ের দুই কর্মকর্তা যুগ্ম মহাপরিচালক (অপারেশন) এএম সালাহউদ্দীন ও পরিচালক ট্রাফিক (বাণিজ্য) মো. নাহিদ হাসান খান এবং সহজ ডটকমের কর্মকর্তা যুবায়ের হোসেন আদালতের ডায়াসের সামনে আসেন।

আদালত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ করে বলেন, রেলে এত অব্যবস্থাপনা কেন থাকবে? কেন টিকিটে কালোবাজারি হবে? কেন মানুষ ট্রেনের ছাদে যাবে? আপনারা কি রেলকে গ্রাস করতে চাইছেন? এ অবস্থা চলতে পারে না।

আদালত বলেন, রেল আমাদের জাতীয় সম্পদ। সেই সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্ব আপনাদের দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আপনারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে ওঠে। ট্রেন থেকে পড়ে তো দুর্ঘটনাও হতে পারে। আর আপনারা নিশ্চিন্তে ঘুমান। এটা হতে পারে না। আপনারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করুন।

আদালত আরো বলেন, আইনে নিষিদ্ধ থাকলেও রেল কর্মকর্তারা ট্রেনের ছাদে যাত্রী বহনের অনুমতি দেন। এই যাত্রীরা তো আর বিনা পয়সায় ভ্রমণ করে না। যাত্রীদের এই অর্থের ভাগ রেল কর্মকর্তারা পান বলেই ট্রেনের ছাদে যাত্রী ভ্রমণ করেন। এ সময় হাইকোর্ট বলেন, আজ থেকে রেলের ছাদে যাত্রী ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হলো। যদি যাত্রী ভ্রমণ করে তাহলে এর পরণতি কি হবে সেটা ঘুণাক্ষরেও কল্পনা করতে পারছেন না।

এমএইচডি/এসএসএইচ