নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এস এম ওয়াজেদ আলী খােকন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক দুই মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মামলায় তাদের বিরুদ্ধে দুই কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযোগ ছিল নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার পাবলিক প্রসিকিউটর হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসামিদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন।

বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দু’টি দায়ের করেন। দুদক পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, পাবলিক প্রসিকিউটর এস এম ওয়াজেদ আলী দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে তার নিজ নামে ও তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে মোট ৮৫ লাখ ৩২ হাজর ৩৭৫ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন। মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্যের মাধ্যমে স্থানান্তর ও রুপান্তরের মাধ্যমে গােপন করা সম্পদসহ মােট ৯৯ লাখ ৪৯ হাজার ৩৫৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে দুদক আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরােধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

অপর মামলায় পাবলিক প্রসিকিউটর এস এম ওয়াজেদের স্ত্রী মিসেস সেলিনা ওয়াজেদ মিনুর বিরুদ্ধে একই ধারায় ২৭ লাখ ৩৯ হাজার ১৬১ টাকার সম্পদের তথ্য গােপনসহ মােট ১ কোটি ১ লাখ ৫৬ হাজার ১৭৪ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। একইসঙ্গে এজাহারে বলা হয়েছে তদন্তকালে আসামিদের নামে আরও কোনো সম্পদের তথ্য পাওয়া গেলে তা আমলে নেওয়া হবে।

২০১৪ সালের এপ্রিলে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ সাতজন খুনের ঘটনা ঘটে। ওই মামলায় ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালত সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন, র‌্যাব-১১-এর চাকরিচ্যুত সাবেক অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার এম মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজার আদেশ দেন।

আলোচিত সাত খুনে নিহতরা হলেন- নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকার, যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান স্বপন, স্বপনের গাড়ি চালক জাহাঙ্গীর, নজরুলের সহযোগী তাজুল ইসলাম, নজরুলের বন্ধু সিরাজুল ইসলাম লিটন ও চন্দন সরকারের গাড়ি চালক ইব্রাহিম। নিম্ন আদালতের পর উচ্চ আদালতে ২০১৮ সালেে ২২ আগস্ট ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রেখে বাকি আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা বহাল রাখেন। বর্তমানে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে রয়েছে। 

আরএম/জেডএস