আদালতের আদেশ অমান্য করায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে কেন তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে গণপূর্ত সচিবকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট শিশির কান্তি মজুমদার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এমএমজি সরোয়ার পায়েল।

অ্যাডভোকেট শিশির কান্তি মজুমদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ১৯৮৬ সালে মতিঝিলের ১২৬ নম্বর বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির ( খ)  তফসিলভুক্ত হয়। বাড়ির অংশীদাররা কোর্ট অব সেটেলমেন্টে মামলা করেন। তখন কোর্ট অব সেটেলমেন্ট থেকে বলা হয় এই বাড়ি এদেশীয় মালিকের সম্পত্তি। সুতরাং এটা পরিত্যক্ত সম্পত্তি হবে না। সরকার কোর্ট অব সেটেলমেন্টের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন। রিট খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। আপিল বিভাগও সরকারের আবেদন খারিজ করে দেন। 

তিনি বলেন, তখন বাড়ি মালিকেরা গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে গেজেট করে বাড়ি বুঝিয়ে দেওয়ার আবেদন করে। এরপর বাড়ি বুঝে না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন বাড়ির অংশীদাররা। রিটের শুনানি নিয়ে ২০২০ সালের ২২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট দুই সপ্তাহের মধ্যে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে বাড়ির মালিকদের আবেদনটি নিষ্পত্তি করতে বলেন। হাইকোর্টের সে আদেশেও সাড়া দেয়নি মন্ত্রণালয়। তখন গণপূর্ত সচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেন উম্মেতুল ফাতিমাসহ ওই বাড়ির পাঁচ অংশীদার। আদালত অবমাননার মামলার শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার গণপূর্ত সচিবের বিরুদ্ধে জারি করেন হাইকোর্ট।

উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেকে বাড়িঘর ফেলে পাকিস্তান চলে যায়। তখন সরকার এসব বাড়িকে পরিত্যক্ত হিসেবে চিহ্নিত করে। ১৯৮৬ সালে এসব বাড়ির বিষয়ে গেজেট জারি করে সরকার। এরমধ্যে সরকারের দখলে থাকা বাড়িগুলো ‘ক’ তফসিলভুক্ত এবং ব্যক্তির দখলে চলে যাওয়া বাড়িগুলো ‘খ তফসিলভুক্ত। এ নিয়ে অনেক মামলা আছে। এসব মামলার বিচারের জন্য ১৯৮৬ সালে দুটি আদালত গঠন করে সরকার। এর মধ্যে ‘প্রথম কোর্ট অব সেটেলমেন্ট’ শুধু ঢাকার পরিত্যক্ত বাড়ি এবং ‘দ্বিতীয় কোর্ট অব সেটেলমেন্ট’ ঢাকা ছাড়া সারা দেশের পরিত্যক্ত বাড়িগুলোর মামলার বিচার করে। রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আদালত দুটির অবস্থান।

এমএইচডি/ওএফ