প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, দুর্নীতি এমন একটি ক্যান্সার যা গণতন্ত্রকে নষ্ট করে, দেশকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়, রাষ্ট্রের ভিত্তিকে দুর্বল করে দেয়।

রোববার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি আয়োজিত সংবিধান দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনায় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, দুর্নীতি গণতন্ত্রকে নষ্ট করে, দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। এটি জনগণকে বিক্ষুব্ধ করে, জন্ম দেয় ক্রোধের। এ জন্য দুর্নীতিকে নির্মূল করতে হবে। রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গের প্রতি জনগণের আস্থা দৃঢ় করতে সকলকে সামান্যতম দুর্নীতি থেকেও দূরে থাকতে হবে। সামান্যতম দুর্নীতিও আস্থার জায়গা ধ্বংস করে দেয়।

আগামী প্রজন্মকে দুর্নীতিমুক্ত একটি রাষ্ট্র উপহার দিতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আসুন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ পতাকাবাহীদের জন্য একটি দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্রযন্ত্র রেখে যাই, যাতে তারা আরও উজ্জ্বল আলোয় প্রজ্বলিত হয়।

আইনজীবীদের আন্দোলনের গৌরবময় অধ্যায়ের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, অগণতান্ত্রিক সামরিক শাসন আমলে এ দেশে বিচার বিভাগ নিয়ে অশুভ ও অবাস্তব অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছিল। এরই অংশ হিসেবে অসাংবিধানিক উপায়ে হাইকোর্ট বিভাগকে খণ্ড খণ্ড করে দেশের বিভিন্ন জেলায় বেঞ্চ স্থাপন করা হয়েছিল। গণতন্ত্র নস্যাতের সেই সময়ে আইনজীবীরা তীব্র আন্দোলন করেছিলেন।

তিনি বলেন, আমাদের সংবিধানের ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে এ বছর। এই সংবিধানের ধারক ও বাহক হিসেবে দেশের সকল আইন ও সকল আইনগত কার্যক্রমে সাংবিধানিক চেতনার প্রতিফলন নিশ্চিত করার সুমহান দায়িত্ব বিচার বিভাগের। একটি শক্তিশালী বিচার বিভাগ বাংলার মানুষের আজন্ম লালিত স্বপ্ন। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল, তারা এবং তাদের বংশধররা চায় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের মানুষকে যে স্বপ্ন দেখিয়েছিল, সেটা বাস্তব না হোক। তারা চান, এদেশের মানুষ আবার তাদের প্রজা হয়ে থাক।

তিনি বলেন, খুনিরা সামরিক শাসনের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে এ দেশের মানুষের মন থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অবিচ্ছেদ্য। তাই এই দুটোকে যেমন বিচ্ছিন্ন করে ফেলা যাবে না, তেমনি ভুলাও যাবে না।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান, বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল বক্তব্য রাখেন।

এমএইচডি/এসকেডি