চাকরি দেওয়ার কথা বলে ধর্ষণ : রিমান্ড শেষে ২ জন কারাগারে
ব্যাংকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে এক গার্মেন্টস কর্মীকে বাসায় ডেকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় সঞ্জিব কুমার দাস (৩৭) ও তার সহযোগী আনিকাকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। সঞ্জিব কুমার দাস মাদারীপুর জেলা বিআইডব্লিওটিএর চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী।
সোমবার (০৮ মার্চ) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদার এ আদেশ দেন। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখা থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সূত্র জানায়, এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সবুজবাগ থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) আজগর আলী পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আসামিদের আদালতে হাজির করেন। একইসঙ্গে তারা স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন। এরপর আসামিরা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিতে অস্বীকার করেন। এরপর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এর আগে ২ মার্চ তাদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। গত ১ মার্চ সবুজবাগ থানায় ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
বিজ্ঞাপন
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগীর বাড়ি ঝালকাঠিতে। তিনি দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে ভাবির সঙ্গে থাকেন ও স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন। পাঁচ বছর আগে স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর থেকেই ভাবির সঙ্গে থাকেন। পাশাপাশি অন্য কোথাও কাজের সন্ধান করছিলেন।
গত ১০ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পরিচিত সঞ্জিব দাসের (৩৭) সঙ্গে দেখা হয় ভুক্তভোগী নারীর। কুশল বিনিময় ও কথাবার্তার এক পর্যায়ে সঞ্জিব ওই নারীকে ব্যাংকে ভালো চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেন। পাঁচ দিন পর ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টার দিকে সঞ্জিব তাকে ফোন করে জানান যে ব্যাংকে ভালো চাকরির সন্ধান আছে। এখনই তাকে মাদারটেক টেম্পো স্ট্যান্ডে আসতে হবে। ওই নারী সন্ধ্যা ৬টায় মাদারটেক টেম্পো স্ট্যান্ডে যান।
ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত সঞ্জিব দাস সন্ধ্যা ৬টায় তাকে দক্ষিণ মাদারটেকের ১২৫/গ বাসার ৬ষ্ঠ তলায় নিয়ে যায়। ব্যাংক কর্মকর্তার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে একটি কক্ষে বসিয়ে রেখে সে বাইরে যায়। ওই সময় পাশের রুমে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক নারীও ছিলেন। ওই নারীও না কি ব্যাংকে চাকরি করেন।
পরে রাত ৯টার দিকে তিন জন লোকসহ সঞ্জিব বাসায় ফেরেন। তাদের ব্যাংকের লোক বলে পরিচয় করিয়ে দেয়। তাদের নাম- আজিজুর রহমান (৪১), জামাল (৩৫) ও মো. রাসেল/বিপ্লব (৪৫)। তারা চাকরির বিষয়ে তথ্য জানতে চান ও বিভিন্ন প্রশ্ন করেন।
কথা বলার একপর্যায়ে আজিজুরকে রেখে সঞ্জিব, জামাল ও রাসেল পাশের রুমে চলে যায়। রাত ১০টার দিকে আজিজুর ওই নারীকে ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এরপর আসামি সঞ্জিব, জামাল, রাসেলও পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। আর আনিকা নামে ওই নারী এসব কাজে সহায়তা করে।
পরে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ও মোবাইলে তুলে রাখা নগ্ন ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে সঞ্জিব নিজেই ওই নারীকে মাদারটেক টেম্পো স্ট্যান্ডে পৌঁছে দেয়। কেরানীগঞ্জে ফিরে ঘটনার বিস্তারিত ভুক্তভোগীর ভাবিকে জানালে পরদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘটনা শুনে তাকে হাসপাতালের ওসিসি বিভাগে ভর্তি করা হয়। পরে আসামিদের পূর্ণাঙ্গ নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে ওই নারী থানায় মামলা দায়ের করেন।
টিএইচ/জেডএস