অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম

ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জেরে আসামি আলী আহমেদ কথোপকথন অন্যায়ভাবে রেকর্ড করেন। রেকর্ডকৃত অডিও ক্লিপটি চাঁদাবাজি বলে রূপ দেওয়ায় চেষ্টা করেন এবং পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করেন। এ ঘটনায় সংসদ সদস্যকে সামাজিকভাবে চরম হেয় করা হয় এবং তার মানসম্মান ক্ষুণ্ণ করা হয়।

কামরাঙ্গীরচর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম অভিযোগপত্রে এসব কথা উল্লেখ করেন। ২২ ফেব্রুয়ারি মামলার এ তদন্ত কর্মকর্তা চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

অভিযোগপত্রে আসামিরা হলেন,আলী আহমেদ, ড.কনক সরওয়ার সৈয়দ মো.সরওয়ার ই আলম, জামাল দেওয়ান ও আলম বাদশা। অপর এক আসামি জুনায়েদ হোসেন ওরফে জুবায়েরের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে অব্যাহতির আবেদন করেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখা থেকে আজ (১১ মার্চ) অভিযোগপত্রের বিষয়টি  নিশ্চিত হওয়া গেছে।

অভিযোগত্রে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, ‘ঢাকা ২ আসনের সংসদ সদস্য জনাব অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম দীর্ঘ ১২বছর ধরে উক্ত আসনে নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসাবে আছেন। সেই সুবাদে তিনি এলাকার বিভিন্ন ঘটনা বা অভিযোগের বিষয়ে বিভিন্ন সালিস দরবার করতেন। তিনি বিএলএফের প্রথম ব্যাচের ট্রেনিংপ্রাপ্ত একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতির কারণে তিনি বাসা থেকে বের না হয়ে মোবাইল ফোনে বাদী-বিবাদী উভয়পক্ষের কথা শুনতেন এবং বিভিন্ন ধরনের দিক নির্দেশনা দিতেন। অত্র মামলার ঘটনার পরিস্থিতির কিছুদিন পূর্বে ‘ঢাকা টোটাল ক্যাবল নেটওয়ার্ক’ এর এমডি জনাব ইউসুফ তার এফ ফিড হোল্ডার জনাব আলি আহমেদের মধ্যে দেনা পাওনার বিষয়ে বাদির নিকট একটি অভিযোগ আসে। অভিযোগে ডিটিসিএন ক্যাবল নেটওয়ার্কের ম্যানেজিং ডিরেক্টর জনাব মো. জামাল উদ্দিন ইউসুফ জানান, তার নিকট হতে আসামি আলী আহমেদ ফিডার হিসেবে পাঁচশতর বেশি লাইন পরিচালনা করতেন। প্রতি মাসে ১৩ হাজার টাকা করে ৯ মাসের ডিস লাইনের চার্জ ১ লাখ ১৭ হাজার টাকা বকেয়া থাকায় মৌখিকভাবে টাকা পরিশোধের কথা বললেও আলি আহমেদ বকেয়া টাকা না দেওয়ায় বিষয়টি ন্যায়বিচার ও নিষ্পত্তির জন্য এমপি জনাব অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের কাছে জানান।

এমপি মহোদয় বিষয়টি নিয়ে আলী আহমেদের সঙ্গে তার (এমপি মহোদয়) ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন থেকে গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর দুইবার কথা বলেন এবং তার বক্তব্য জানতে চান। মামলার আসামি আলী আহমদ ও তার সহযোগী জামাল দেওয়ান পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এমপি মহোদয়ের সঙ্গে আলী আহমদের কথোপকথন অন্যায়ভাবে রেকর্ড করেন। রেকর্ডকৃত অডিও ক্লিপটি চাঁদাবাজি বলে রূপ দেওয়ার জন্য ও এমপি মহোদয়ের রাজনৈতিক সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্য আসামি আলী আহমেদ ও তার সহযোগী জামাল দেওয়ান পূর্বশত্রুতার জের হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং ইউটিউবে আপলোড করার পরিকল্পনা করতে থাকেন। এরপর এ অডিও ক্লিপটি জামাল দেওয়ান তার রাজনৈতিক অফিসে বসে পুনরায় শোনার জন্য আসামি আলম বাদশাকে ডাকেন। আলম বাদশা উক্ত রেকর্ডটি আলী আহমেদের মোবাইল হতে জামাল দেওয়ানকে শোনান। এ সময় জামাল দেওয়ান পরিকল্পিতভাবে উক্ত অডিও রেকর্ডটি আলম বাদশার মোবাইলে রেকর্ড করার জন্য বললে আলম বাদশা এবং জোনায়েদ হোসেন ওরফে জুবায়ের অডিওটি কপি করে তার মোবাইলে নেন। পরবর্তীতে উক্ত অডিও ক্লিপটি আসামি আলী আহমেদ, ড. কনক সরোয়ার, জামাল দেওয়ান ও আলম বাদশাহ পরস্পর যোগসাজশে পরিকল্পিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ইউটিউবে অপলোড করে। যা পরবর্তীতে ভাইরাল হয়।’

উল্লেখ্য, কেবল অপারেটরদের দেনা-পাওনার সালিশ আলোচনাকে চাঁদাবাজি উল্লেখ করে প্রচারণার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মামলা করেন ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।

টি এইচ/এসকেডি