সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের দুই দিনব্যাপী ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। গতকালের মতো আজও বিএনপি ও আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের পাল্টাপাল্টি মিছিল ও হট্টগোলের জেরে উত্তপ্ত ছিল সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ।

নির্বাচনে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করলেও বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা ভোট দান থেকে বিরত থেকেছেন। তারা নতুন নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করে তাদের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের দাবি জানান। 

নির্বাচন উপ-কমিটির অন্যতম সদস্য ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান মনির ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুই দিনব্যাপী নির্বাচনে ৮ হাজার ৬২০ ভোটারের মধ্যে ৪ হাজার ১৩৭ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। গতকাল ২ হাজার ২১৭ জন আইনজীবী ভোট দিয়েছিলেন। আজ ১ হাজার ৯২০ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। আজ রাতেই ভোট গণনা করে ফল ঘোষণা করা হবে।

ভোটের শেষ দিন যেমন ছিল

নির্বাচনের দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের আশেপাশে ৫ শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সকাল ৯টার পর বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আপিল বিভাগে গিয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে নির্বাচন নিয়ে নানা অভিযোগ উত্থাপন করে বিচার প্রার্থনা করেন

সকাল ১০টা ১০ মিনিট থেকে কঠোর পুলিশি নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। 

বেলা ১১টার দিকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার ‍রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন প্রধান বিচারপতির দপ্তরে যান। এসময় সিনিয়র আইনজীবীদের সঙ্গে বসে সুপ্রিম কোর্ট বারে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিশ্চিত করার জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলকে পরামর্শ দেন প্রধান বিচারপতি।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের প্রবেশমুখে মুখোমুখি অবস্থান নেন বিএনপি ও আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা। এসময় পাল্টাপাল্টি মিছিল-স্লোগানে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোল শুরু হয় এবং ধস্তাধস্তি চলতে থাকে। বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত থেমে থেমে হট্টগোল ও হইচই চলে। এ সময় চার পাশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নীরব ভূমিকায় থাকতে দেখা গেছে।

বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আবারও মুখোমুখি অবস্থান নেন বিএনপি ও আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত চলে পাল্টাপাল্টি মিছিল ও স্লোগান। তবে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। অবশেষে বিকেল ৫টায় শেষ হয় ভোটগ্রহণ।

সাংবাদিকদের ওপর লাঠিচার্জের ঘটনায় পুলিশের দুঃখ প্রকাশ

দুপুরে ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের কার্যালয়ে আসেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশিদ।

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন

তার বক্তব্যের পর ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক টেলিফোনে ল' রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি আশুতোষ সরকারের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি সভাপতির কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে সে বিষয়টি দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন। 

যা ঘটেছিল গতকাল

গতকাল সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরুর কথা ছিল। কিন্তু বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের আন্দোলনের কারণে সেটি পিছিয়ে বেলা ১২টায় শুরু হয়। এ সময়ের মধ্যে আওয়ামী ও বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা একাধিকবার মুখোমুখি অবস্থান নেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে আইনজীবী ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৩০ জন আহত হন।  

এমএইচডি/এসকেডি