জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের বোন, ভাগনে ও ভাগনির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় ছালেহ মুহাম্মদ আবু ফয়েজ ওরফে মিঠু (৫০) নামে একজনকে রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। 

সোমবার (২৭ মার্চ) চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন জুনায়েদের আদালত এ আদেশ দেন। 

ছালেহ মুহাম্মদ আবু ফয়েজ চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মরিয়মনগর ফুলবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা। তার বাবার নাম মৃত মুবিনুল হক। তিনি মামলার ভুক্তভোগীদের পক্ষে বেসরকারি এনসিসি ব্যাংকের অল্টারনেট ডিরেক্টর ছিলেন।

আদালত সূত্র জানায়, মামলার বাদী সেলিনা আক্তারের বাবা মৃত আব্দুস সালাম এনসিসি ব্যাংকের সাবেক পরিচালক ছিলেন। তিনি ২০০৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন। আব্দুস সালামের মৃত্যুর পর এনসিসি ব্যাংকে থাকা শেয়ার ওয়ারিশ সূত্রে তার মেয়ে সেলিনা আক্তার, ছেলে মঈন উদ্দিন ও স্ত্রী আনোয়ারা বেগমের মধ্যে আনুপাতিক হারে বণ্টন হয়। তাদের মধ্যে সেলিনা আক্তার দেশের বাইরে থাকেন। মঈন উদ্দিন পাইলট হওয়ায় তিনিও বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকেন। এছাড়া আনোয়ারা বেগমও বৃদ্ধ হওয়ায় পারিবারিক সিদ্ধান্তে তার ভাই আবু ফয়েজকে তিনজনের পক্ষ থেকে অল্টারনেট ডিরেক্টর মনোনীত করা হয়। এরপর নানা সময়ে জালিয়াতির মাধ্যমে আবু ফয়েজ ভুক্তভোগীদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব থেকে প্রায় ১১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।

পরে বিষয়টি ভুক্তভোগীরা জানতে পেরে আবু ফয়েজের বিরুদ্ধে নগরের পাঁচলাইশ থানা ও জেলার রাঙ্গুনিয়া থানায় পৃথক মামলা দায়ের করেন। তার মধ্যে পাঁচলাইশ থানার মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে রয়েছেন আবু ফয়েজ। একই সঙ্গে তাকে রাঙ্গুনিয়া থানায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামাল আব্বাস। 

এরপর এ মামলাতেও অভিযুক্ত আবু ফয়েজকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন আদালত। সবশেষ মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাতদিনের রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ (সোমবার) অভিযুক্তকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামাল আব্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিযুক্ত আবু ফয়েজ নানা সময়ে জালিয়াতি করে তার ভাগনে, ভাগনি ও বোনের ১১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। কেউ যাতে বুঝতে না পারে এজন্য চার কোটি টাকা ভাগনি সেলিনা আক্তারের নামে এফডিআর করেন এবং পরবর্তীতে ওইসব টাকাও আত্মসাৎ করেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য অভিযুক্তের বিরুদ্ধে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

এমআর/কেএ