অপহরণ চক্রের দুই সদস্য রিমান্ডে, অপরজন কারাগারে
অল্প টাকা মুক্তিপণ নিয়ে অভিনব পন্থায় শিশু অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্যের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডে নেওয়া আসামিরা হলেন মো. মিল্টন মাসুদ ও মো. শাহীনুর রহমান। চক্রের অপর সদস্য সুফিয়া বেগমকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
শনিবার (৬ মে) শিশু পাচারকারী চক্রের তিন সদস্যকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এর মধ্যে মিল্টন ও শাহীনের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সমিত মজুমদার। অপর আসামি সুফিয়া বেগমকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলামের আদালত দুজনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন এবং নারী আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
আরো পড়ুন>>>মানবিক অপহরণ : অল্প মুক্তিপণে ছাড়া পেত অপহৃত শিশু
আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার নারী শিশু সংক্রান্ত সাধারণ নিবন্ধন শাখা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
মামলা সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৫ মে) গাজীপুরের সালনা এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগ। তাদের হেফাজত থেকে অপহরণে ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন ও ৫টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়। চক্রটি ৬-৭ বছর ধরে স্কুলশিশুদের অপহরণ করে আসছে। এ পর্যন্ত ৫০০-৬০০ শিশুকে অপহরণ করে তাদের পিতা-মাতার কাছ থেকে অর্থ আদায় করেছে তারা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ মার্চ উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টরের হলি ল্যাবের সামনে থেকে শাহিন শেখ নামে ৬ বছরের একটি শিশু হারিয়ে গেলে উত্তরা পূর্ব থানায় সাধারণ ডায়েরি হয়। ওই জিডির সূত্র ধরে খোঁজ মেলে এ অপহরণ চক্রের। চক্রটি মূলত স্কুল-মাদ্রাসা, বাজার বা রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন জায়গায় একা থাকা ৮-১৬ বছর বয়সী শিশুদের টার্গেট করে, যারা পিতা-মাতার মোবাইল নম্বর বলতে পারে।
এ চক্রের প্রধান মিল্টন মাসুদ টার্গেটকৃত শিশুর সঙ্গে ভালো ব্যবহার করে। শিশুদেরকে তার বাবার পাওনা টাকা দেওয়ার কথা বলে অন্য কোথাও নিয়ে যায়। তারপর পিতা-মাতার মোবাইল নম্বর নিয়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ১০-৫০ হাজার টাকা দাবি করে। অনেক সময় ৫০০-১০০০ টাকা দিলেও শিশুদের ছেড়ে দেয়। আবার অনেক সময় টাকা না দিলেও দুই-তিন ঘণ্টার মধ্যে ছেড়ে দেয়। প্রায় ৬-৭ বছর ধরে চক্রটি ৫০০ থেকে ৬০০ শিশুর পিতা-মাতার কাছ থেকে এভাবে অর্থ আদায় করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এনআর/এমএ