বাসায় খাবার সরবরাহ করতে গিয়ে চুরির অভিযোগ উঠেছে ফুডপান্ডার ডেলিভারি ম্যানের বিরুদ্ধে। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমাইয়া আজিজের বাসায় এ ঘটনা ঘটে। চুরির ঘটনায় ফুডপান্ডার কাছে লিগ্যাল নোটিশ দিয়ে জবাব চেয়েছিলেন তিনি। জবাব না পাওয়ায় ফুডপান্ডার বিরুদ্ধে মামলা করবেন। ফৌজদারি অপরাধের জন্য মামলা ও হাইকোর্টে ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

বুধবার সুপ্রিম কোর্টে সার্বিক বিষয়ে ব্যারিস্টার সুমাইয়া আজিজ বলেন, ফুডপান্ডা রাজধানী জুড়ে খাবার ডেলিভারি সার্ভিস হিসেবে কাজ করছে। তাদের একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলাম। গ্রাহক নিরাপত্তা বিষয়ক কিছু তথ্য চেয়ে। আজ পর্যন্ত তারা কোনো জবাব দেয়নি। 

তিনি বলেন, ফুডপান্ডা কীভাবে ডেলিভারি ম্যান নিয়োগ দিয়ে থাকে, তাদের অতীতের তথ্য কীভাবে যাচাই করে সে বিষয়ে কোনো তথ্য গ্রাহকদের কাছে নেই। এছাড়াও রাইডার বা ফুড ডেলিভ্যারি ম্যানদের মাধ্যমে কোনো অপরাধ হলে গ্রাহক হিসেবে ফোনে কখনো ফুডপান্ডাকে পাওয়া যায় না। শুধু একটা চ্যাট বক্স আছে যেখানে অভিযোগ করা যায়। তারা মন চাইলে জবাব দেবে। রাইডার বা ডেলিভারি ম্যান যদি কোনো অপরাধ করেন সেই মুহূর্তে ইমারজেন্সি সার্ভিস হিসেবে ফুডপান্ডার কোনো সেবা নেই।

লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর কারণ প্রসঙ্গে এ আইনজীবী বলেন, গত ৯ এপ্রিল ফুডপান্ডার একজন রাইডার ফুড ডেলিভারি করার সময় আমার বাড়ি থেকে কিছু টাকা নিয়ে পালিয়ে যান। তিনি অন্য কিছু নিয়েছেন কিনা তা-ও জানতে পারিনি। সঙ্গে সঙ্গে আমরা সেই রাইডারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলাম, তখন রাইডার আমাদের নম্বর ব্লক করে দেন। বিষয়টি তখনই ফুডপান্ডাকে জানিয়ে তাদের প্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলতে চাই। তারপর থেকে ফুডপান্ডা আজ পর্যন্ত কোনো যোগাযোগ করেনি। 

তিনি বলেন, ঢাকা শহরে এক কোটির বেশি মানুষ বসবাস করছেন। তারা এই মানুষ নিয়ে মনোপলি বিজনেস করছে। তাদের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ। গত ৯ এপ্রিল ছিল রমজানের সময়। প্রচুর পরিমাণে ওয়ার্কিং ফ্যামিলি আছে। যাদের হয়তো ছোট বাচ্চা বা হাউজ ওয়াইফ রেখে যাচ্ছেন। বৃদ্ধ বাবা-মা রেখে যাচ্ছেন। তারা হয়তো ডিজিটালি পেমেন্ট করে দিচ্ছেন। খাবার হয়তো ডেলিভারি ম্যান দিয়ে যাচ্ছেন। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকদের নিরাপত্তা কী। এটার কোনো জবাব বা সঠিক তথ্য ফুডপান্ডা দিতে পারেনি। 

সুমাইয়া আজিজ বলেন, ১৫ এপ্রিল লিগ্যাল নোটিশের মাধ্যমে তাদেরকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিই। ১৬ এপ্রিল তারা চিঠি দিয়ে ১৪ দিনের সময় চাইল। উনারা মূলত কাস্টমারদের নিরাপত্তা নিয়ে ন্যূনতম চিন্তিত না। লিগ্যাল নোটিশে ৩টা শর্ত ছিল।

এক. যার বাড়ি থেকে রাইডার চুরি করে পালিয়েছে তাকে যেন অবশ্যই একটা অ্যাপোলজি লেটার দেওয়া হয়। এটা যেকোনো কোম্পানির দায়িত্ব। কিন্তু তারা সেটা করেননি। ফুডপান্ডা নিজেও অপরাধী হয়ে গেল এ কাজের মাধ্যমে।

দুই. ঈদের পর যেন একটা কাস্টমার কেয়ার খোলা হয় বা একটা নম্বর দেওয়া হয়। সেখানে মানুষ তাদের অভিযোগগুলো জানাতে পারে। কিন্তু এটাও তারা করেননি।

তিন. হয়রানির জন্য সিকিউরিটি হিসেবে ১০ লাখ টাকা পেনাল্টি চাওয়া হয়েছিল সেটারও কোনো জবাব দেয়নি। তারা শুধু একজন আইনজীবীর মাধ্যমে জানিয়েছিলেন ১৪ দিন সময় দরকার। এ সময়ের পর তাদের আবার একটি রিমাইন্ডার লেটার দেওয়া হয়েছিল। ১৪ দিন সময় অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। তারা কোন জবাব দেননি।

তিনি বলেন, আমরা এখন ফুডপান্ডার বিরুদ্ধে মামলায় যাব। তাদের এমডি থেকে শুরু করে কেউ এই চুরির দায় এড়াতে পারেন না। 

এমএইচডি/ওএফ