আসন্ন কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীর আফতাবনগরে গরুর হাট বসানোর নির্দেশনা সংক্রান্ত নোটিশ স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আবাসিক এলাকা আফতাবনগরে গরুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

সোমবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালত বলেছেন, আবাসিক এলাকায় গরুর হাট বসতে পারে না।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ।

এর আগে গত ১৫ মে আসন্ন কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে রাজধানীর আফতাবনগরে গরুর হাট না বসানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইউনুছ আলী আকন্দ এ রিট দায়ের করেন।

রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, ঢাকা উত্তর সিটির প্রধান ভূমি অফিসার, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, ইস্টার্ন হাউজিং ও ঢাকা জেলা প্রশাসককে বিবাদী করা হয়েছে।

গত ২ মে স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের (স্থানীয় সরকার বিভাগ) পক্ষে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ সাহে আলম সই করা সম্পত্তি বিভাগ ইজারা/বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরপত্র ঘোষণা করেন। দরপত্রে ঈদুল আযহার দিনসহ ৫ (পাঁচ) দিন গরুর হাটের কথা উল্লেখ করা হয়। এতে প্রথম পযার্য়ে দরপত্র বিক্রি ১৫ মে। আর ১৬ মে সাড়ে দুপুর ১২টা থেকে দুপুর আড়াইটা পযর্ন্ত। এভাবে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ পযার্য়ে দরপত্র বিক্রির পর ১৯ জুন পযর্ন্ত দরপত্রের বাক্স ও খাম খোলার পর প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সর্বোচ্চ দরদাতাকে সিডিউল দেওয়া হবে।

রাজধানীর বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং আফতাবনগরে ব্লক-বি হতে এইচ পযর্ন্ত খালী জায়গা যা বাড্ডা ইউনিয়ন পরিষদের অংশ। আফতাবনগরসহ উত্তর সিটি কর্পোরেশন সাত স্থানে বাজারের কোরবানীর গরু বিক্রির জন্যে বাজারের ইজারা আহ্বান করেছেন।  

এর আগে সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের কাছে বাসিন্দাদের পক্ষে শেখ মাহমুদ উজ্জ্বল আবেদন করেন। বলা হয়, জহিরুল ইসলাম সিটিতে (আফতাবনগর) বসবাসরত লোকজন পবিত্র কোরবানি ঈদের আগে ও পরে প্রায় এক মাস উষ্ণ অস্থায়ী হাট স্থাপনের কারণে ব্যাপকভাবে মানবেতর জীবন যাপন করেন, যেহেতু চলাচলের প্রধান সড়কের উপর অস্থায়ী গরু-ছাগলের হাট বসে বলে (আফতাবনগর) এখানে বসবাসরত নাগরিকদের যাতায়াতে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এই সময় কোনো লোক অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ঢোকানো সম্ভব হয়ে ওঠে না। কোনো লোক মারা গেলেও তাহার লাশ বহন করা দূরুহ হয়ে পড়ে।

এছাড়াও গরু-ছাগলের হাট বসানোর কারণে আবাসিক এলাকাটির বসবাসের পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। গরু-ছাগলের নানাবিধ বর্জ্যে এলাকাটির পরিবেশ ব্যাপকভাবে দূষিত হয়।

এছাড়া প্রধান সড়কটিও জহিরুল ইসলাম সিটি (আফতাবনগর) ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে সারা বছরই প্রধান সড়কটিতে খানাখন্দ থাকায় জহিরুল ইসলাম সিটিতে (আফতাবনগর) বসবাসরত সব নাগরিকের যাতায়াতে ব্যাপক অসুবিধা পোহাতে হয়। এ কারণে রিট আবেদনটি করা হয়েছে।

এমএইচডি/এমএ/