জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দার রহমানের বিরুদ্ধে এম এ মতিন নামের একজন সাক্ষ্য দিয়েছেন। 

মঙ্গলবার (৩০ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে তিনি সাক্ষ্য দেন। তার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামীকাল (৩১ মে) দিন ধার্য করেছেন আদালত। মামলাটিতে চার্জশিটভুক্ত ৫৬ সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত সাতজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বিষয়টি জানিয়েছেন।

আজ (মঙ্গলবার) দুপুর ২টার পর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আদালত কক্ষে অবস্থান নেন। এতে করে সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায়। এসময় বিচারক এজলাস ছেড়ে চলে যান।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন আইনজীবী জানান, সাক্ষ্যগ্রহণের সময় এজলাসের ভেতরে ছবি তোলাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনার সূত্রপাত হয়। এসময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের কয়েকজন বিভিন্ন স্লোগান দিতে শুরু করেন। এরপর আদালতের বাইরে অতিরিক্ত পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। 

অন্যদিকে আদালতের বাইরে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা। বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটের দিকে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা ধাওয়া দিয়ে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের এজলাস থেকে বের করে দেন। এসময় কয়েকজন আইনজীবী আহত হয়েছেন। এজলাস থেকে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা চলে গেলে সন্ধ্যা ৬টায় এজলাসে বসেন বিচারক। এরপর ৬টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত এম এ মতিন নামের ওই ব্যক্তির সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। 

এর আগে গত ২১ মে মামলার বাদী দুদকের উপ-পরিচালক জহিরুল হুদার সাক্ষ্যের মাধ্যমে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

এর আগে গত ১৩ এপ্রিল তারেক ও জোবায়দার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন একই আদালত। এ মামলায় তাদেরকে পলাতক দেখানো হয়েছে। গত বছরের ১ নভেম্বর তারেক ও জোবায়দার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন একই আদালত।

গত বছরের ২৬ জুন তারেক ও জোবায়দাকে পলাতক ঘোষণা করে ৪ কোটি ৮২ লাখ টাকার দুর্নীতি মামলা দায়ের ও তার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে করা পৃথক রিট আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।

রিট খারিজ করে দেওয়া রায়ে হাইকোর্ট একইসঙ্গে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় দায়ের করা এ মামলার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়ে সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতকে যত দ্রুত সম্ভব বিচার কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশ দেন।

এছাড়া ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে এ রায় পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে মামলার রেকর্ড ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠাতে বলা হয়।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, জ্ঞাত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জোবায়দা রহমান ও তার মা ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। তারেক রহমানের শাশুড়ি মারা যাওয়ায় এই মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এনআর/কেএ