আইনজীবীদের হাইকোর্ট
সুপ্রিম কোর্টে মিছিল-সমাবেশ না করার রায় কেউ অনুসরণ করেনি
উচ্চ আদালতে ভাঙচুরের ঘটনা দেশের মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। এতে উচ্চ আদালতের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে রাজনীতি ও মিছিল সমাবেশ না করার বিষয়ে বিচারপতি এম এ মতিনের রায় রয়েছে। সেই রায় আমরা (আইনজীবীরা) কেউই অনুসরণ করিনি। ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর ও আওয়ামীলীগপন্থি আইনজীবীদের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপির আইনজীবীদের জামিন শুনানিতে এসব কথা বলেন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
বিজ্ঞাপন
জামিনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস. এম মুনীর বলেন, বারে একটার পর একটা ঘটনা ঘটছে। হাইকোর্ট বলেন, আইনজীবীরা ঐক্যবদ্ধভাবে থাকলে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা ঘটবে না।
শুনানি শেষে হাইকোর্ট ১৪ আইনজীবীকে আগাম জামিন দেন, চার জনকে আত্মসর্ম্পণের নির্দেশ দেন।
জামিন শুনানিতে বিএনপির ১৮ আইনজীবীর পক্ষে অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী আলী বলেন, আমরা আইনজীবীদের জামিনের জন্য এসেছি। এ পর্যায়ে এজাহারের অংশবিশেষ পড়ে শোনান হাইকোর্ট। যেখানে বার সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুরের কথা বলা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
তখন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর বলেন, জামিন শুনানির জন্য একজন আইনজীবী দাঁড়ানো উচিত ছিল। কিন্তু উনারা তো অনেকজন দাঁড়িয়েছেন।
এসএম মুনীর বলেন, সকলের উচিত কোর্টকে সম্মান করা। এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, আমি তো কোর্টকে অসম্মান করিনি। আমি আইনজীবীদের জামিন প্রার্থনা করেছি।
এ সময় হাইকোর্ট সবাইকে শান্ত হতে বলেন।
এস এম মুনীর বলেন, মামলার এজাহার পড়লে বোঝা যায় বারের একটা ঘটনা ঘটেছে। যদি ঘটনা ঘটে থাকে সেই ঘটনা ঘটানো কতটা সঠিক ছিল?
এ পর্যায়ে হাইকোর্ট বলেন, বারে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা কে বা কারা করেছে আমরা জানি না। তবে যেটা হয়েছে সেটা কেউ ভালোভাবে নেয়নি। সব কিছু করেন, কিন্তু ভাঙচুরের ঘটনা কেন? এস এম মুনীর বলেন, আগে তো এরকম ঘটনা ঘটেনি।
এ পর্যায়ে হাইকোর্ট বলেন, বিচারপতি এম এ মতিনের রায় রয়েছে। সেই রায় আমরা কেউই অনুসরণ করিনি। যদি এ কথা বলি তাহলে বলবেন পার্টিসান। এজন্য বলছি ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেটাই প্রত্যাশা।
শুনানি শেষে হাইকোর্ট ১৪ আইনজীবীকে আগাম জামিন দেন। আগাম জামিনপ্রাপ্ত আইনজীবীরা হলেন- সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের নেতা গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মো. সাগর হোসেন, মো. রেজাউল করিম রেজা, মাহবুবুর রহমান খান, রবিউল আলম সৈকত, মো. নজরুল ইসলাম ছোটন, রেদোয়ান আহমেদ রানজিদ, মো. মাহমুদ হাসান, মো. কামাল হোসেন, মো. আনিসুর রহমান ও খালেদ মাহমুদুর রহমান আদনান।
এ ছাড়া আইনজীবী কাজী মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ, নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, মো. কাইয়ুম ও মো. উজ্জল হোসেনকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হাইকোর্ট বলেন, এদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় আগাম জামিন দেওয়া হলো না। এ পর্যায়ে আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, আইনজীবীদের নিয়ে দুই ধরনের আদেশ না দিলেই আমাদের জন্য মঙ্গল হতো। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকতে চাই। তখন হাইকোর্ট বলেন, আদেশ পরিবর্তন হবে না।
এমএইচডি/এনএফ