ফাইল ছবি

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলায় রওশন আলী মিয়া ও তার ভাতিজা মিরাজুল ইসলাম তুহিনকে গুলি করে হত্যার দায়ে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে দুই আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।

রোববার (২০ আগস্ট) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক জেসমিন আরার আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- হানিফ ওরফে হৃদয়, এনামুল হাসান মিয়া ও কাইয়ুম মিয়া। দণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। হানিফ ও হাসান আপন দুই ভাই। 

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আউয়াল মোল্লা ও রেজাউল মাতুব্বর। তাদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

অপর আসামিদের মধ্যে দুলাল মিয়াকে এক ধারায় ১০ বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আরেক ধারায় তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে বলে আদেশে উল্লেখ করেছেন আদালত। আসামি হাবিবুর রহমানকে দুই ধারায় সাত বছরের কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাঁচু মিয়াকে তিন বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রবিন শিকদারকে এক বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় পারভেজ মিয়া, হাফিজুর রহমান, তুহিন মিয়া, রবিউল ইসলাম, কে এম রাজু আহমেদ ও শহিদুল ইসলামকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে। মামলার বিচার চলাকালে আসাদুজ্জামান সিকদার নামের এক আসামি মারা গেছেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মিজানুর রহমান খান এ তথ্য জানান।

এর আগে গত ৩ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের জন্য গত ১৩ আগস্ট দিন ধার্য করেন। ওইদিন বিচারক ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ছুটিতে ছিলেন। এজন্য ভারপ্রাপ্ত বিচারক এম আলী আহমেদ রায় ঘোষণার তারিখ পিছিয়ে আজ ২০ আগস্ট ধার্য করেন। 

জানা যায়, নগরকান্দার কাইচাইল ইউনিয়নের হানিফ মিয়া হৃদয়ের সঙ্গে বিরোধ ছিল একই এলাকার রওশন মিয়ার। ২০১৯ সালের ১০ আগস্ট বিকেলে মসজিদে নামাজ পড়ে বাড়ি ফেরার পথে হানিফ মিয়ার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা এলোপাথাড়ি গুলি চালিয়ে হত্যা করে রওশন আলী মিয়া ও মিরাজুল ইসলাম তুহিনকে।

এ ঘটনার পরদিন রওশন আলীর ভাই রায়হান উদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে নগরকান্দা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই- ফরিদপুর) উপ-পরিদর্শক আব্দুল মজিদ ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার বিচারের সময় আদালত ৩৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

এনআর/জেডএস