দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা (সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) ইসাহাক আলীসহ চার কর্মকর্তাকে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা থেকে অবিলম্বে সরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

অপর তিন কর্মকর্তা হলেন, সাঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সাদেকুজ্জামান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আহসান হাবীব ও ফুলছড়ি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন।

বুধবার (৩ জানুয়ারি) বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ লিখিতভাবে এ আদেশ দিয়েছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও নির্বাচন কমিশন সচিবের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন ও এ বি এম ছিদ্দিকুর রহমান খান। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোকাররামুছ সাকলান।

এর আগে রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের নির্বাচনের দায়িত্ব থেকে সাঘাটার ইউএনও এবং ওসিকে সরিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে এই আসনে গত উপ-নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী সব প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের নির্বাচনের দায়িত্ব পালন থেকে বিরত রাখতে বলা হয়েছে।’

সাঘাটা, ফুলছড়ি ও গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ছাড়া অন্য যেকোনো উপজেলা থেকে গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে প্রিজাইডিং এবং সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নিয়োগ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়ে ওই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারজানা রাব্বী বুবলী (ট্রাক প্রতীক) ১ জানুয়ারি সিইসি বরাবর একটি আবেদন দেন। বুবলি সাবেক ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার কন্যা।

ওই আবেদন মতে, ২০২২ সালের ১২ অক্টোবর আসনটিতে উপনির্বাচন হয়। তখন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে প্রভাবিত করে নির্বাচন সম্পন্ন করার চেষ্টা করেন। নির্বাচন পরিস্থিতি ইসি কর্তৃক নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় তখন একযোগে সব কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। এ নিয়ে প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নির্বাচন কমিশনের তদন্ত কমিটি কর্তৃক প্রমাণিত। সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার অনেক কর্মকর্তা ও সাতটি কলেজের অনেক শিক্ষক নৌকা প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারসহ লিফলেট বিতরণ করে ভোট প্রার্থনা করছেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহমুদ হাসান ও তার সমর্থকেরা ট্রাক প্রতীকের কর্মী ও সমর্থকদের হুমকি দিচ্ছেন এবং বলছেন, স্থানীয় প্রিজাইডিং ও সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে প্রভাবিত করে ২০২২ সালের ১২ অক্টোবরের মতো পরিবেশ সৃষ্টি করে ভোটের ফলাফল নৌকার পক্ষে নেবেন। কিন্তু আবেদনে সাড়া না পেয়ে ফারজানা রাব্বী মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) রিটটি করেন।

এমএইচডি/জেডএস