আদালত অবমাননার ব্যাখ্যা দিতে হাইকোর্টে হাজির হওয়া গণঅধিকার পরিষদ (জিওপি) এর সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের শুনানি শেষে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, নুর একজন সাহসী যোদ্ধা। যিনি আমার, আপনার, আমাদের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) হাইকোর্টে শুনানি শেষে তিনি এ কথা বলেন।

ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, নুর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার জন্য রাজপথের সাহসী এবং পরীক্ষিত যোদ্ধা। তিনি গত ৭ ডিসেম্বর রাজনৈতিক অঙ্গনে একটি রাজনৈতিক বক্তব্য রেখেছিলেন। সেই বক্তব্য বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়। তবে একটি পত্রিকায় প্রকাশিত একটি খবর সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার্ড জেনারেলের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।

আরও পড়ুন

তিনি বলেন, এই বিষয়টির জন্যই নুরকে সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশনা দেন এবং রুল ইস্যু করেন। আজকে আমরা সিনিয়র আইনজীবীসহ আমাদের সিনিয়র কাউন্সিল নুরুল হক নুরের পক্ষে আদালতে সময়ের প্রার্থনা করেছি। আদালত সময়ের প্রার্থনা মঞ্জুর করেন এবং চার সপ্তাহের সময় দিয়েছেন। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। সেদিনও সকাল সাড়ে দশটায় নুরকে সশরীরে সুপ্রিম কোর্টে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।

নুরের দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, যেকোনো একটা সিঙ্গেল ওয়ার্ডও মিসলিড হতে পারে। আমরা বলেছি, নুরুল হক নুর যে স্পিচ (বক্তব্য) দিয়েছেন সেই ভিডিও রেকর্ড হিসেবে আমরা পেয়েছি। ভিডিওটা দেখে আমাদের কাছে মনে হয়েছে যেভাবে বক্তব্যটা ওই পত্রিকায় এসেছে তিনি (নুর) সেভাবে মিন করেননি। আশাবাদী আমরা এই সময়ের পরে যে উত্তর দেব হাইকোর্ট তাতে সন্তুষ্ট হবেন। তবে আদালত বলেছেন, প্রত্যেকেরই দায়িত্বশীলভাবে কথা বলা উচিত।

এই আইনজীবী আরো বলেন, আমাদের মূল বক্তব্য হলো নুরুল হক নুরের পক্ষ থেকে যে সময় প্রার্থনা করা হয়েছিল সেটা আদালত মঞ্জুর করেছেন। যথাসময়ে নুর কোর্টে আসবেন এবং রুলের জবাব আদালতের কাছে উপস্থাপন করা হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মূলত, বিচারকদের নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্যের কারণে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরকে তলব করেন হাইকোর্ট। তাকে আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুলও জারি করেন হাইকোর্ট।

গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক–আল–জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ এ দেন।

এর আগে ওই একই বছরের ৭ ডিসেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে নুরুল হক নুরের বক্তব্য নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিজয়নগর পানির ট্যাংক মোড়ে এক সমাবেশে আদালতের বিচারকদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর বক্তব্য দেন নুরুল হক নুর। সেই প্রতিবেদনটি আদালতের নজরে আনা হয়।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কালীপদ মৃধা জানান, হাইকোর্ট নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল দিয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতেই ১৭ জানুয়ারি তাকে তলব করা হয়েছিল।

আরএইচটি/জেডএস