গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ডা. মনিরুল হুদা রুপম হত্যা মামলার আসামি মির্জাপুরের বাশতৈল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান মিল্টনকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে তার কারামুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত দেবনাথ। আসামি মিল্টনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মুনসুরুল হক চৌধুরী ও এসএম শাহজাহান।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলা যমুনা ক্লিনিকের চিকিৎসক ছিলেন ডা. রুপম। তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি যমুনা ক্লিনিক ছেড়ে একই এলাকার আল মদিনা ক্লিনিকে যোগ দিলে তা নিয়ে বিরোধের জেরে তাকে ২০১২ সালের ১৭ জুলাই হত্যা করা। 

হত্যার দুদিন পর নিজের গাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গাজীপুরের জয়দেবপুর থানায় মামলা করেন নিহত রুপমের পরিবার। যমুনা ক্লিনিকের মালিক ডা. আনিসুর রহমান চৌধুরী নোমানকে আসামি করে মামলা করা হয়। এ ঘটনায় তদন্ত শেষে ২০১৬ সালের ৪ মে ফাইনাল রিপোর্ট দেয় পুলিশ। 

এর বিরুদ্ধে বাদীপক্ষ নারাজির আবেদন দিলে আদালত তা গ্রহণ করে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেয়। এরপর প্রিন্স হক নামে এক মেডিকেল রিপ্রেজেন্টিটিভকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রিন্স আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। এরপর নিহত রুপমের গাড়িচালক শিপন মিয়াসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করে ডিবি পুলিশ অভিযোগপত্র দাখিল করে। তবে এর বিরুদ্ধেও বাদীপক্ষ নারাজির আবেদন দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় পিবিআই ও সর্বশেষ সিআইডি এ মামলায় তদন্ত করে। 

যমুনা ক্লিনিকের মালিক ডা. আনিসুর রহমান চৌধুরী নোমান, গাড়ীচালক শিপন, মির্জাপুরের বাশতৈল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুর রহমান মিল্টনসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি। এরপর মিল্টন ২০২০ সালের ২৭ ডিসেম্বর গাজীপুর মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। পরে তিনি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করলে গত ৩ ফেব্রুয়ারি জামিন দেন হাইকোর্ট। 

কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে এই জামিন আদেশ স্থগিত করে দেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের আবেদন খারিজ করে দেন। 

এমএইচডি/ওএফ