অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি সুপ্রিম কোর্টের একজন বিশিষ্ট আইনজীবী। আইনজীবীদের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে সবসময় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। এবার তিনি সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক পদে নির্বাচন করতে চান। আইনজীবীদের ভোটে বিজয়ী হয়ে প্রথম নারী সম্পাদক হতে চান তিনি। 

তার (যুথি) আরেকটি পরিচয় তিনি যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের সহধর্মিণী। ছাত্রজীবন থেকে রাজনীতি করা অ্যাডভোকেট যুথি রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের (রুলা) প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। উত্তরবঙ্গ আইনজীবী সমিতির প্রথম নারী সভাপতি ‍তিনি। এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ট্রেজারার ছিলেন অ্যাডভোকেট যুথি।

নির্বাচনে অংশ নিতে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ থেকে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি। একগুচ্ছ প্রতিশ্রুতি দিয়ে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের লড়াইয়ে নেমেছেন তিনি।

অ্যাডভোকেট যুথি মনে করেন গত ২/৩ বছরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে সেই অর্থে কোনো নির্বাচন হয়নি। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মাধ্যমে আইনজীবীদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে চান তিনি।

নির্বাচিত হলে তিনি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে আইনজীবীদের ভোটাধিকারের সব সংশয় ও ভীতি দূর করবেন।

সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ‌‘কোনো দলের পদধারী কোনো নেতাকর্মী নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না’— এই বিষয়টি বাস্তবায়ন করতে ভূমিকা রাখবেন।

অ্যাডভোকেট যুথি বলেন, বার সম্পাদক নির্বাচিত হলে বার ও বেঞ্চের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করার চেষ্টা করব। দলীয় প্রভাবের কারণে আইনজীবীদের মধ্যে যে ঐক্যহীনতার সৃষ্টি হয়েছে, তা দূরীভূত করে আইনজীবীদের মধ্যে বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্ব তথা ঐক্যবদ্ধতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করব। আইনজীবীদের দীর্ঘদিনের সমস্যা তাদের অপর্যাপ্ত আসন। আইনজীবীরা গাদাগাদি করে অমানবিকভাবে তাদের আইনি কাজকর্ম পরিচালনা করে থাকেন। আমি নির্বাচিত হলে সব আইনজীবীদের জন্য আসনের ব্যবস্থা করব। আইনজীবীদের পারস্পরিক যোগাযোগের জন্য ডিজিটাল ডিরেক্টরি তৈরিসহ আরও সহজতর পদ্ধতির মাধ্যমে একে অপরের কমিউনিকেশন সহজ করে তোলার চেষ্টা করব। আইনজীবীদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে আলাদা ‘মেডিকেল সেবা’ চালু করব।

আইনজীবীদের ‘সিন্ডিকেট’ থেকে মুক্ত করে স্বাতন্ত্রিক পরিচয় দিয়ে নির্দিষ্ট ‘বলয়’ থেকে বের করে আনব। বার ও বেঞ্চের যোগাযোগ সহজীকরণ করার লক্ষ্যে নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করব। আইনজীবীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নিয়মিত ট্রেনিং ও সেমিনারের ব্যবস্থা করব। আইনজীবীদের যাতায়াত দ্রুত ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে পরিবহনের ব্যবস্থা করব। মেধাবী ও পিছিয়ে পড়া আইনজীবীদের জন্য বিভিন্ন স্কিমে ‘শিক্ষাবৃত্তি’ প্রণয়ন করব। নারী আইনজীবীদের অধিকার রক্ষায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করব। ডে কেয়ার সেন্টারের আধুনিকীকরণ করব। সুপ্রিম কোর্টের অভ্যন্তরের পরিবেশ সুন্দর করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করব। সরকারের প্রথম শ্রেণির চাকরিজীবীদের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করব। আইনজীবীরা তাদের বেনেভলেন্ট ফান্ড যেন সহজ শর্তে উত্তোলন এবং জীবনের অন্তিম লগ্নে নিজেই ব্যবহার করতে পারে সেই লক্ষ্যে নিয়মনীতি প্রণয়নে সবার মতামতের ভিত্তিতে কাজ করব। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের মর্যাদা পুনরুদ্ধারের জন্য সব ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি বলেন, আমি আইনজীবীদের নিয়ে স্বপ্ন দেখি, সুন্দর একটা বারের স্বপ্ন দেখি। এই বারকে নিয়ে যেন গর্ববোধ করতে পারি। আমরা কালো কোট পরে যেন গর্ববোধ করতে পারি। পরবর্তী প্রজন্ম থেকে বলতে পারে আমি ওনার মতো আইনজীবী হতে চাই। সুপ্রিম কোর্ট বারের  ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চাই।

এমএইচডি/এমএ