আট বছর পার হলেও নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশ না করায় ওয়াসা’র এমডির প্রতি আপিল বিভাগের অসন্তোষ

প্রায় আট বছর পার হলেও একটি নিয়োগ পরীক্ষার ফল প্রকাশ না করায় ওয়াসা’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাসকিম এ খানের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ। আদালত বলেছেন, ‘হয় ফল প্রকাশ করবেন, না হয় বাতিল করবেন। কিন্তু তা না করে এভাবে কাউকে ঝুলিয়ে রাখতে পারেন না’। আদালত ওয়াসার এমডির উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রাখেন, আপনারা কি মনে করেন না নিয়োগপ্রার্থীরাও মানুষ?

মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন। পরে আদালত প্রায় আট বছর আগে ২০১৩ সালের জুন মাসে দেওয়া বিজ্ঞপ্তির আলোকে অনুষ্ঠিত নিয়োগ পরীক্ষার ফল এক সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ করতে অথবা অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা জানাতে ঢাকা ওয়াসাকে নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে আগামী ২৯ মে’র মধ্যে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ওই নিয়োগ পরীক্ষার ফল সাত বছরেও প্রকাশ না করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন আদালত। ঢাকা ওয়াসার পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার এ এম মাসুম। নিয়োগপ্রার্থীদের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা।

ওয়াসার বিভিন্ন পদে নিয়োগের জন্য ২০১৩ সালের ১১ জুন দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এর আলোকে ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৪ সালের ২০ জুলাই লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। ওই বছরের ২৭ জুলাই থেকে মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘদিনেও ফল প্রকাশ না করায় লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা ফল প্রকাশের জন্য বিভিন্ন সময় ওয়াসা বরাবর পাঁচটি আবেদন করেন। এরপরও ফল প্রকাশ না করায় গত বছরের ১৬ আগস্ট আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু ফল প্রকাশ না করায় হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন জাহিদুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন নিয়োগপ্রার্থী। হাইকোর্ট ওয়াসাকে অতিসত্বর ফল প্রকাশের নির্দেশ দেন। ওই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করে ওয়াসা। হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে দেন আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় আপিল বিভাগের পূর্নাঙ্গ বেঞ্চে ওয়াসার আবেদনের ওপর শুনানি হয়।

শুনানিতে ওয়াসা’র আইনজীবী আদালতকে জানান, ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি হয়েছে। এ কারণে ফল প্রকাশ করা হয়নি। এ সময় আদালত বলেন, ‘তাহলে ওই দুর্নীতির তথ্য আগে কেন আদালতকে বলেননি’। আদালত উভয়পক্ষের শুনানি নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে ফল প্রকাশ অথবা অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দেন।

এমএইচডি/এমএআর/