আসছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। মুসলিম উম্মাহর বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। দীর্ঘ এক মাস সিয়াম সাধনার পর পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগমন। গতবছরের মতো এবারও করোনাভাইরাস রোধে লকডাউনের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ঈদ। তাই এবারের ঈদের আনন্দও অনেকটাই পানসে।

করোনাকালীন ঈদ নিয়ে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলেছেন দেশের প্রথিতযশা চার বিশিষ্ট আইনজীবী। তারা দেশের মানুষকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বিশিষ্ট এই আইনজীবীরা হলেন- রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সাবেক আইন মন্ত্রী জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন এবং সাবেক বিচারপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী।

করোনাকালীন ঈদ নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, গত বছর এবং এই বছর ঈদের চিন্তা ভাবনা তো অন্যরকম। আগে নতুন জামা-কাপড় কিনে আনন্দ করতাম, এখন সেটা সম্ভব না। মহামারির কারণে মানুষ আজ ঘরবন্দি। বাসার নিচেই একটা মসজিদ আছে ঈদে সেখানে নামাজ পড়তে পারি। অথবা ঘরেই ছেলেদের নিয়ে নামাজ পড়ব। নামাজ শেষে স্ত্রীর হাতের রান্না খাবো। বাইরে যাবো না। 
সবার প্রতি আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রত্যেকেই যেন আশপাশের মানুষের খোঁজ খবর নেই, অসহায়দের সহায়তা করি। করোনার মধ্যে ঈদের আনন্দ যেন ভাগ করে নিতে পারি। এই করোনাকালীন ঈদে একে অন্যের প্রতি সহায়তার হাত বাড়াতে হবে। ঈদে আনন্দটা কম হোক, কিন্তু সবাই মিলে যেন আনন্দটা করতে পারি। আর সবাইকে অনুরোধ করব, আমরা যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের আনন্দ উপভোগ করি।

জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ঈদে ঢাকাতেই থাকব। স্থানীয় মসজিদে নামাজ পড়ব। আবার বাসায়ও নামাজ পড়তে পারি। তিনি বলেন, এই করোনা মহামারিতে যাদের সম্পদ আছে, তাদের উচিত গরিবদের উদার হাতে সহায়তা করা। ঈদের কোনো উৎসব, কোনো আনন্দ এই মহামারির মধ্যে করা উচিত না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সাবেক আইন মন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, আমি এখন ঘর থেকেই বের হই না। ঈদে বাসায়ই নামাজ পড়ব। সবার প্রতি আহ্বান থাকবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেন ঈদের আনন্দ করে। কারণ, যে উপসর্গ দেখা দিয়েছে, এটা বিস্তৃত লাভ করলে মারাত্মক আকার ধারণ করবে। প্রত্যেকের উচিত খুব সাবধানে, সতর্কতার সঙ্গে চলা। যতটুকু না করলেই নয়, এবারের ঈদে ততটুকু আনন্দ করা উচিত।

সাবেক বিচারপতি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী বলেন, আমি প্রতি বছর শ্যামলী জামে মসজিদে ঈদের নামাজ পড়ি। কিন্তু বয়স্কদের বাসায় নামাজ পড়ার বিষয়ে রাষ্ট্রীয় একটি সিদ্ধান্ত আছে। রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত শিথিল হলে মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। অন্যথায় বাসায়ই নামাজ পড়ব।

তিনি বলেন, সারাবিশ্ব আজ করোনা আক্রান্ত। আমাদের বয়সের যারা আছেন তাদের অবশ্যই ঘরে থাকা উচিত। এবার খুব সাদামাটাভাবে ঈদ পালন করা উচিত। গরিবদের সহযোগিতা এবং মানুষদের বিভিন্নভাবে বোঝাতে হবে। তারা যাতে বাইরে বের না হয়। ঈদ উপলক্ষে যতটুকু সম্ভব আমি মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করেছি। দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, করোনা থেকে যেন আমরা মুক্তি লাভ করতে পারি এটাই হোক এ ঈদের প্রার্থনা।

এমএইচডি/এমএইচএস