কমার্স কলেজ শিক্ষার্থী খুন : ৬ আসামির যাবজ্জীবন
৬ বছর আগে সাভারের গেন্ডা এলাকায় ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদের জেরে ঢাকা কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী মারুফ খানকে হত্যার দায়ে ৬ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, শিমুল হাওলাদার ওরফে শ্যামল, শামীম আলী, ইমরান হোসেন, ফয়সাল আহম্মেদ মোত্তাকিন, লিটন ওরফে রইচ।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকার ৬ষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নাজিয়া নাহিদের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। যাবজ্জীবন দণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
রায় শেষে আদালত আসামিদের উদ্দেশ্য বলেন, ‘সাজার বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগ আছে। আপিল করবেন। আল্লাহ সবার মঙ্গল করুন।’
আসামিরা জামিন ছিলেন। তবে এদিন ফয়সাল আহমেদ আদালতে হাজির হননি। আদালত তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। অপর ৫ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় পুলিশ সদস্যদের মধ্যে অস্থিরতা, উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায়। তখন বিচারক বলেন,'এমন কিছু করবেন না যেন ওরা ভয় পায়।' পরে তাদের আদালত থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
বিজ্ঞাপন
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মাহমুদ হাসান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
এদিক রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে ভিকটিমের বাবা আতাউর রহমান খান বলেন,'ন্যায় বিচার পেয়েছি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামিরা ভিকটিম মারুফ খানের বান্ধবী মুনাকে ইভটিজিং করতো। ২০১৮ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে সাভারের গেন্ডা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তারা মুনাকে ইভটিজিং করে। মারুফ এর প্রতিবাদ করে। পরে সে মুনাকে রিকশায় করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। সন্ধ্যায় গেন্ডায় আব্দুর রহমানের মোটর সাইকেলের গ্যারেজ সংলগ্ন আসামিরা মারুফের ওপর হামলা চালায়। মঞ্জু তাকে ছুরিকাঘাত করে। এতে মারাত্মক আহত হন মারুফ। তাকে চিকিৎসার জন্য এনাম মেডাক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ায়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে রেফার করা হয়। সেখানে নিয়ে আসার পথিমধ্যে মারা যায় মারুফ।
এ ঘটনায় মারুফের ভাই লুৎফর রহমান খান মানিক ২২ আগস্ট সাভার মডেল থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে সিআইডি পুলিশের উপ-পরিদর্শক মিজানুর রহমান ২০১৯ সালের ৩ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
২০২২ সালের ২৩ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত চার্জশিটভূক্ত ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
এনআর/এসএম