বস রাফি ও তার সহযোগী

আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রের মূলহোতা আশরাফুল মন্ডল ওরফে বস রাফিসহ চারজনকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- আব্দুর রহমান শেখ, ইসমাইল সরদার ও মোছা. সাহিদা বেগম।

বুধবার (২ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াছমিন আরা শুনানি শেষে রিমান্ডের এ আদেশ দেন। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, এদিন দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক আসামিদের আদালতে হাজির করেন। একইসঙ্গে মামলার সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে প্রত্যেক আসামির ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। অপরদিকে, রাষ্টপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক রিমান্ডের এ আদেশ দেন।

মঙ্গলবার (১ জুন) দুপুরে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আ ন ম ইমরান খান জানান, পার্শ্ববর্তী দেশে নারী পাচার এবং সম্প্রতি বাংলাদেশি তরুণীকে পৈশাচিক নির্যাতনের ঘটনায় আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্রের মূলহোতা আশরাফুল মন্ডল ওরফে বস রাফি ও তার সহযোগী ম্যাডাম সাহিদাসহ পাচার চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ভারতে ধারণ করা একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, ২০-২২ বছরের একজন তরুণীকে বিবস্ত্র করে ৩/৪ জন যুবক শারীরিক ও বিকৃতভাবে যৌন নির্যাতন করছে।

এ নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ। পরে তারা ভিডিওটির একজনের সঙ্গে বাংলাদেশি একটি ছেলের ছবির মিল খুঁজে পায়। পুলিশ নিশ্চিত হয়- নির্যাতনকারী ওই যুবকের নাম রিফাতুল ইসলাম হৃদয়। সে রাজধানীর মগবাজার এলাকার বাসিন্দা। রিফাতুল ইসলাম হৃদয়ের পরিচয় তার মা ও মামার কাছ থেকে শনাক্ত করা হয়। এলাকায় সে টিকটক হৃদয় নামে পরিচিত।

চক্রের মূলহোতা বস রাফির পরিচয়

গ্রেফতার বস রাফির শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি। আট বছর আগে থেকে ভারতের দক্ষিণাঞ্চলে তার গমনাগমন। সে সেখানে ট্যাক্সি ড্রাইভার, হোটেল বা রিসোর্ট কর্মচারী অথবা কাপড়ের ব্যবসা করতো। সে বিগত পাঁচ বছর ধরে নারী পাচারের সঙ্গে জড়িত। দুই বছর আগে টিকটকের মাধ্যমে হৃদয়ের সঙ্গে তার পরিচয়। সে টিকটক হৃদয়ের মাধ্যমে প্রায় অর্ধশতাধিক তরুণীকে পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করেছে। টিকটক হৃদয় ছাড়াও তার অন্যান্য এজেন্ট রয়েছে।

সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ভিডিওর ভিকটিমকে পাচারের উদ্দেশ্যে টিকটক হৃদয়কে বস রাফি প্রলুব্ধ করে। পরে রাফি ভিকটিমকে টিকটক হৃদয়ের সাহায্যে গত বছরের অক্টোবর মাসে পাচার করে বেঙ্গালুরুতে আনে এবং সেফ হাউজে অবস্থান করে। সেখানে নির্যাতন করে ভিডিওটি ধারণ করা হয়।

টিএইচ/আরএইচ