রাজধানীর মাইন্ড এইড হাসপাতালে এএসপি আনিসুল করিম হত্যা মামলায় হাসপাতালটির পরিচালক ফাতেমা খাতুন ময়নাকে কেন জামিন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার (১০ জুন) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আদালতে ফাতেমার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এইচ এম সানজিদ সিদ্দিকী ও অ্যাডভোকেট আরিফুল হক রোকন। রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ।

এর আগে গত বছরের ১২ নভেম্বর রাজধানীর মাইন্ড এইড হাসপাতালে এএসপি আনিসুল করিম হত্যা মামলায় হাসপাতালটির পরিচালক ফাতেমা খাতুন ময়নাকে (৪৫) গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানায়, ফাতেমা আদাবর মাইন্ড এইড হাসপাতালের মালিকপক্ষের একজন পরিচালক। নিম্ন আদালতে জামিন চেয়ে ব্যর্থ হয়ে হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন ফাতেমা।

প্রসঙ্গত, হাসপাতাল থেকে সংগ্রহ করা সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুলকে টানাহেঁচড়া করে একটি কক্ষে ঢোকানো হয়। তাকে হাসপাতালের ছয়জন কর্মচারী মিলে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। এরপর আরও দুজন কর্মচারী তার পা চেপে ধরেন। এ সময় মাথার দিকে থাকা দুজন কর্মচারীকে হাতের কনুই দিয়ে তাকে আঘাত করতে দেখা যায়। হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। একটি নীল কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুলের হাত পেছনে বাঁধা হয়। কিছুক্ষণ পর আনিসুলকে উপুড় করা হয়। তার শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ায় একজন কর্মচারী তখন তার মুখে পানি ছিটান। পরে কর্মচারীরা কক্ষের মেঝে পানি দিয়ে পরিষ্কার করেন। সাত মিনিট পর সাদা অ্যাপ্রোন পরা একজন নারী কক্ষে প্রবেশ করেন। ১১ মিনিটের মাথায় কক্ষের দরজা লাগিয়ে দেওয়া হয়। ১৩ মিনিটের মাথায় তার বুকে পাম্প করেন সাদা অ্যাপ্রোন পরা নারী। হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের খাতায় লেখা রয়েছে ‘ব্রট ডেড’ অর্থাৎ সেখানে নিয়ে আসার আগেই আনিসুলের মৃত্যু হয়েছিল। 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র আনিসুল করিম ৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। এক সন্তানের জনক আনিসুলের বাড়ি গাজীপুরে। সর্বশেষ আনিসুল করিম বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন।

এমএইচডি/জেডএস