হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পে সব ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদসহ ১০ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বুধবার (৩০ জুন) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়েস আল হারুনী।

পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, আদালত হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকার সব ধরনের বাণিজ্যিক স্থাপনা ৬০ দিনের মধ্যে উচ্ছেদসহ ১০ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন।

রায়ের নির্দেশনা হলো:

১) তুরাগ নদীর রায়ের নীতি অনুসারে ঢাকার হাতিরঝিলকে জনগণের সম্পত্তি ঘোষণা করা হলো।

২) ঢাকার হাতিরঝিল প্রকল্পে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, দোকানসহ সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন অবৈধ ঘোষণা করা হলো। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে সব বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়া হলো।

৩) প্রকল্প এলাকায় বাণিজ্যিক স্থাপনা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।

৪) প্রকল্পের সংরক্ষণ, উন্নয়ন, পরিচালনার জন্য পৃথক একটি কর্তৃপক্ষ গঠন করে প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে পরিচালনা করা।

৫) প্রকল্পের স্থায়ী পরামর্শক হিসেবে বুয়েটের প্রকৌশল বিভাগ ও সেনাবাহিনীর ২৪তম ব্রিগেডকে যৌথভাবে পরামর্শক নিয়োগ করা হলো।

৬) প্রকল্প এলাকায় জনসাধারনের জন্য আন্ডারগ্রাউন্ডে ওয়াশরুম তৈরি করা।

৭) প্রকল্প এলাকায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা।

৮) পায়ে চলা, সাইকেল চালান ও প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

৯) প্রকল্প এলাকার লেকে মাছের অভয়ারণ্য তৈরি করা।

১০) প্রকল্প এলাকায় বাণিজ্যিক কোনো স্থাপনা হবে না।

আদালত রায়ে বাঙালি বিজ্ঞানী স্যার জগদীশ চন্দ্র বসুর নামে প্রকল্পের নামকরণের পরামর্শ দেন। রায়ে আদালত রায়ে আরও উল্লেখ করেন যে, হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকা হলো ঢাকার ফুসফুস। এ জন্য এর সুরক্ষা অপরিহার্য। রায়কে চলমান হিসেবে রাখা হয়েছে।

এর আগে ২০১৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্পের নকশা বহির্ভূত স্থাপনার নির্মাণ বন্ধে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না এবং লে-আউট প্ল্যান অনুসারে হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রকল্প রক্ষায় কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এই মর্মে রুল জারি করা হয়।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দিয়েছিলেন। 

একটি জাতীয় দৈনিকে ‘নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় রাউজক’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিটটি করা হয়।

এমএইচডি/ওএফ