দেশের সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া চার ব্যক্তির পরিবারকে ২৫ লাখ করে মোট এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। টাকা পরিশোধের বিষয়টি আপিল বিভাগকে জানানো হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) এ বিষয়ে রিটকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার অনিক আর হক ও অ্যাডভোকেট নিয়াজ মাহমুদ ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।

ব্যারিস্টার অনিক আর হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, সম্প্রতি ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পে-অর্ডারের মাধ্যমে নিহত পাঁচ ব্যক্তির মধ্যে চার জনের প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ লাখ করে টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছেন। ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়টি আদালতকে জানানো হয়েছে।

এর আগে গত ২৯ এপ্রিল ইউনাইটেড হাসপাতালে আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া পাঁচ ব্যক্তির মধ্যে চার জনের প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ লাখ করে টাকা দিতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ হাইকোর্টের আদেশ সংশোধন করে এ নির্দেশ দেন।

অন্যদিকে নিহত পাঁচ ব্যক্তির মধ্যে এক ব্যক্তি মনির হোসেনের পরিবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করায় আদালত তার বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার অনিক আর হক ও আইনজীবী নিয়াজ মোহাম্মদ মাহবুব। ইউনাইটেড হাসপাতালের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান।

গত ১১ জানুয়ারি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া পাঁচ ব্যক্তির মধ্যে চার জনের প্রত্যেকের পরিবারকে তাৎক্ষণিক ৩০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে প্রত্যেক পরিবারকে ১৫ কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। পরে এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ প্রাথমিক ক্ষতিপূরণ হিসেবে চার পরিবারকে ৩০ লাখের জায়গায় ২৫ লাখ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন।

গত বছরের ২৭ মে রাতে রাজধানীর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে এসি বিস্ফোরণের পর আগুনে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনায় ১ জুন বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার রেদোয়ান আহমেদ রানজীব, ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ ও নিয়াজ মাহমুদ জনস্বার্থে পৃথক দুটি রিট দায়ের করেন।

আগুনে মারা যাওয়া রোগীরা হলেন- রিয়াজুল আলম (৪৫), খোদেজা বেগম (৭০), ভেরুন এন্থনি পল (৭৪), মো. মনির হোসেন (৭৫),  মো. মাহাবুব (৫০)।

এমএইচডি/জেডএস