ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে বিভিন্ন মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছেন আসামি হেলেনা জাহাঙ্গীর। যা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।

শুক্রবার (৩০ জুলাই) গুলশান থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় রিমান্ড শুনানিতে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু এসব কথা বলেন।

আরও পড়ুন: রাজনৈতিক দোকান

এদিন সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে আসামি হেলেনা জাহাঙ্গীরকে আদালতে হাজির করা হয়। এর ১৫ মিনিট পর বিচারক এজলাসে আসেন। শুরুতেই বিচারক এজলাসে আইনজীবী, সাংবাদিক ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে যার যার স্থানে অবস্থান করতে বলেন। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবুকে রিমান্ড বিষয়ে শুনানি শুরু করতে বলেন।

শুনানিতে আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে বিভিন্ন মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছেন আসামি হেলেনা জাহাঙ্গীর। যা দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিসহ রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। তাই এ ঘটনার সঙ্গে আর কারাও সংশ্লিষ্টতা আছে কি না তা খুঁজে বের করতে আসামিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, এ মামলার এজাহারে কাউকে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো কিছু বলেননি হেলেনা জাহাঙ্গীর। এমনকি কবে বলেছেন সুনির্দিষ্ট কোনো দিন তারিখও উল্লেখ করা হয়নি। তারপরেও আসামি যদি ডিজিটাল প্লাটফর্মে বা ফেসবুকে কোনো কথা বলে থাকেন সেটা তো কমিটেড। তাহলে তাকে আর রিমান্ডে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। শুধুমাত্র  আসামিকে হয়রানি করার জন্য এ মামলার দেওয়া হয়েছে।

রিমান্ড শুনানির শেষ পর্যায়ে বিচারক আসামি হেলেনা জাহাঙ্গীরকে জিজ্ঞেস করেন তার কিছু বলার আছে কি না?

তখন হেলেনা বলেন, ‘আমি সরকারি লোক। কোনো পদ এখনো হারাইনি। এখনো সে বিষয়ে কোনো নোটিশ পাইনি। আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে ধারণ করি, কেউ যদি তার বিরুদ্ধে কোনো কথা বলে আমি প্রটেস্ট করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এখনো পদে বহাল রয়েছি। আমি ফেসবুকে কোনো ধরনের বাজে মন্তব্য করিনি। কেউ কিছু বলতে পারবে না। আমি সরকারি লোক।’

এরপর উভয় পক্ষের শুনানি শেষে রাত সাড়ে ৮ টায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর তাকে আদালত থেকে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে শুক্রবার গুলশান থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা শেখ শাহানুর রহমান মামলার সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাত ৮টার পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের গুলশান-২ এর ৩৬ নম্বর রোডের বাসভবনে অভিযান শুরু করে র‍্যাব। দীর্ঘ চার ঘণ্টা অভিযান শেষে রাত ১২টার দিকে তাকে আটক করা হয় এবং পরে র‍্যাব সদরদফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয়েছে। এছাড়া বিশেষ ক্ষমতা আইন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন ও টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনসহ চারটি ধারায় আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

টিএইচ/এসকেডি