মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার (এমবিবিএস) প্রকাশিত ফলাফল কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র আদালতে দাখিল করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রোববার (২৯ আগস্ট) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ  এ রুল জারি করেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা সচিব,  স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও পরিচালক এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। তাকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার।

এর আগে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ত্রুটিপূর্ণ ফলাফল কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা এবং ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র এবং উত্তরপত্র আদালতে দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে ১৯৫ জন এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার্থীর পক্ষে রিট দায়ের করা হয়।

রিটে বলা হয়, ৪ এপ্রিল প্রকাশিত ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে অসংখ্য ভুল এবং বড় ধরনের অসংগতি পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর কর্তৃক গত ৭ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত ভর্তি পরীক্ষার নিয়ম অনুযায়ী একজন পরীক্ষার্থী কোনো মেডিকেল কলেজে ভর্তি থাকা অবস্থায় তিনি যদি দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তবে তার মোট প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৭.৫ নম্বর কর্তন করা হবে। আবার কোনো পরীক্ষার্থী যদি গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে থাকেন তাহলে তার ৫ নম্বর কাটা যাবে। কিন্তু প্রকাশিত ফলাফল থেকে দেখা যায়, অনেক পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রে এ নিয়ম পালন করা হয়নি। যেসব পরীক্ষার্থীদের ৭.৫ নম্বর কর্তন করার কথা সেখানে মাত্র ৫ নম্বর কর্তন করা হয়েছে। ফলে ওইসব ভর্তি পরীক্ষার্থীদের ২.৫ নম্বর বেশি দিয়ে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। আবার প্রথমবার পরীক্ষায় যেখানে কোনো নম্বর কাটার কথা নয় সেখানে অনেক পরীক্ষার্থীর ৫ নম্বর কর্তন করে মেধা তালিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। 

এবারের ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত পাঠ্যপুস্তক অনুযায়ী অন্তত দুটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের সঠিক উত্তর ছিল দুটি করে। সেই সঙ্গে অন্তত তিনটি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের কোনো সঠিক উত্তর ছিল না। সংরক্ষিত জেলা ও উপজাতি কোটার আসন পূরণেও ব্যাপক অসংগতি দেখা গেছে। ঢাকা জেলা কোটায় আবেদনকারী  পরীক্ষার্থীকে দেখানো হয়েছে মেহেরপুর জেলার পরীক্ষার্থী হিসেবে। উপজাতি কোটায় সংরক্ষিত আসনে অসংখ্য সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীকে নির্বাচিত করা হয়েছে। এসব ত্রুটি ও অসংগতি রেখে মেধা তালিকা প্রণয়ন করার ফলে হাজার হাজার যোগ্য ও মেধাবী পরীক্ষার্থী মেডিকেল কলেজগুলোয় ভর্তি হওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার মুখে পড়েছে। এসব কারণে প্রকাশিত ফলাফল বাতিল করে এবং ত্রুটি ও অসংগতি সংশোধন করে নতুন মেধা তালিকা প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করলেও দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বরং ত্রুটিপূর্ণ মেধাতালিকায় ভিত্তিতেই মেডিকেল কলেজগুলোতে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে গত ২২ মে থেকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতর ভর্তি কার্যক্রম চালাচ্ছে।

এমএইচডি/এসকেডি