অবশেষে জামিন পেয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে চার্জশিট দাখিল পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিনের এই আদেশ দেন।

জামিন শুনানি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আবদুল্লাহ আবু। তিনি বলেন, জামিন পাওয়া একটা অধিকার। তবে আমরা জামিনের বিরোধিতা করেছি। আদালত যেটা ভাল মনে করেছেন সেটাই আদেশ দিয়েছেন। এতে আমাদের কিছু করার নাই।

আবদুল্লাহ আবু বলেন, আমরা আদালতকে বলেছি পরীমণির বাসায় মাদকসহ অন্যান্য জিনিসপত্র পাওয়া গিয়েছে। বর্তমানে মাদক খুবই ভয়াবহভাবে বাংলাদেশে বিস্তার করেছে। সরকার মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে। এ অবস্থায় তাকে জামিন দেওয়া ঠিক হবে না।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু পরীমণি একজন চিত্রনায়িকা, তিনি বিভিন্ন চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন। তিনি অভিনয় করতে না পারলে, সেক্ষেত্রে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। এই দিকগুলো বিবেচনা করে বিজ্ঞ আদালত জামিন দিয়েছেন।

জামিন চেয়ে যা বলেছিলেন পরীমণির আইনজীবী

পরীমণির আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, ‘আসামি পরীমণিকে সাত দিনের রিমান্ডে অলরেডি নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই রিমান্ডে নেওয়ার পরও কোনও তথ্য উদঘাটন করা যায়নি। রিমান্ডে থাকার কারণে পরীমণির অবস্থা অবনতির দিকে গিয়েছে। তিনি শারীরিকভাবে অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।’

পরীমণি কারাগারে থাকার কারণে তার অনেক (সিনেমার) কাজ বন্ধ রয়েছে দাবি করে তার আইনজীবী বলেন, “তিনি অনেক ছবির কাজ করেছেন। কারাগারে থাকার কারণে ‘প্রীতিলতা’ নামের একটি সিনেমায় তিনি কাজ করতে পারছেন না। তিনি একজন নারী, তিনি জামিন পেতে পারেন। এ ছাড়া আসামি যদি নারী, শিশু অথবা বিকলাঙ্গ হয় তাহলে আদালত জামিন দিতে পারেন।”

আসামি একজন চিত্রনায়িকা, দেশে এবং বিদেশে অনেক ছবির কাজ চলছে উল্লেখ করে তাকে জামিন দিলেও তিনি পলাতক হবেন না বলে আদালতে দাবি করেন তার আইনজীবী। মজিবুর রহমান বলেন, এ মামলার যে ধারা সেটা সর্বোচ্চ সাজা হচ্ছে পাঁচ বছর। সেক্ষেত্রে আসামি অবশ্যই জামিন পেতে পারেন।

তিনি আরও বলেন, যে কোনও শর্তে আমরা জামিন চাই। আর জামিন পেলে আসামি পলাতক হবেন না।

এর আগে, ২২ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালতে পরীমণির জামিন আবেদন করেছিলেন তার আইনজীবী মজিবুর রহমান। তখন আদালত শুনানির জন্য ১৩ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য করেছিলেন। পরে আইনজীবীরা এ নিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৯ আগস্ট উচ্চ আদালতের নির্দেশে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ জামিন শুনানির জন্য ৩১ আগস্ট দিন ধার্য করেন।

উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট রাতে প্রায় চার ঘণ্টার অভিযান শেষে বনানীর বাসা থেকে পরীমণি ও তার সহযোগী দীপুকে আটক করে র‍্যাব। এ সময় পরীমণির বাসায় বিভিন্ন মাদক পাওয়া গেছে বলে জানায় র‍্যাব। ৫ আগস্ট র‍্যাব-১ বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে পরীমণি ও তার সহযোগীর বিরুদ্ধে বনানী থানায় মামলা করে।

টিএইচ/এমএইচএস