অনলাইন প্লাটফর্ম ওটিটি (ওভার দ্যা টপ- হইচই, নেট ফ্লিক্স, অ্যামাজন, বঙ্গবিডি) থেকে অশ্লীলতা রোধ, রাজস্ব আদায় এবং এসব প্লাটফর্ম নিয়ন্ত্রণে নীতিমালা করতে কমিটি গঠন করেছে বিটিআরসি।

৮ সদস্যের কমিটিতে বিটিআরসির কমিশনার (লিগ্যাল অ্যান্ড লাইসেন্স) আবু সৈয়দ দিলজার হোসেনকে আহ্বায়ক এবং উপ-পরিচালক (আইন) পদবির একজনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। এছাড়াও সদস্য করা হয়েছে ছয়জনকে। তারা হলেন- বিটিআরসির মহাপরিচালক (এসএস), পরিচালক (আইন), পরিচালক (এসএস), তথ্য মন্ত্রণালয়ের একজন উপযুক্ত প্রতিনিধি (উপ-সচিবের নিচে নয়), অর্থ, হিসাব ও রাজস্ব বিভাগের একজন প্রতিনিধি (উপ-পরিচালকের নিচে নয়) এবং বিটিআরসির একজন আইন পরামর্শক।

মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে কমিটি গঠন সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। আদালত এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ। বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রেজা-ই রাকিব। এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি অনলাইন প্লাটফর্ম ওটিটি থেকে অশ্লীলতা রোধ, রাজস্ব আদায় এবং এসব প্লাটফর্ম নিয়ন্ত্রণে খসড়া নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ। পরে এ আইনজীবী বলেন, আদালতে বিটিআরসির চেয়ারম্যান এবং সাইবার পুলিশ সেন্টার থেকে দুটি প্রতিবেদন দেওয়া হয়।

বিটিআরসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব প্লাটফর্ম থেকে তাদের কোনো রাজস্ব আদায় হয় না। কোনো ধরনের রেগুলেশন না থাকায় সেটি আদায় হচ্ছে না।

একইভাবে সাইবার পুলিশ সেন্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং পর্নোগ্রাফি আইন থাকলেও প্লাটফর্ম থেকে অশ্লীলতারোধে সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা নেই। যার ফলে সবসময় সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারেন না। এ কারণে যদি এই ধরনের একটা নীতিমালা হয় তাহলে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সুবিধা হবে। এসব বিষয়ে বিবেচনায় নিয়ে আদালত একটি খসড়া নীতিমালা করে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর নেট ফ্লিক্স, হইচইসহ ইন্টারনেট মাধ্যমে (ওটিটি প্লাটফর্ম) ছড়িয়ে পড়া ওয়েব সিরিজের অনৈতিক, নিন্দনীয় ও আইন বহির্ভূত ভিডিওর অংশগুলো সরিয়ে ফেলতে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

এছাড়াও নেটফ্লিক্সের মতো অন্যান্য ওটিটি প্লাটফর্মগুলো থেকে কীভাবে সরকারি রেভিনিউ সংগ্রহ করেন তা ১ মাসের মধ্যে বিটিআরসিকে জানাতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।

ওইদিন বিটিআরসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টারকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় দুটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

গত বছরের ১৫ জুলাই ইন্টারনেট ও বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওয়েব সিরিজের অনৈতিক, নিন্দনীয় ও আইন বহির্ভূত ভিডিওর অংশগুলো সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি এসবের সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে অনুসন্ধান করে একটি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ।

১৪ জুন বাংলাদেশি ওয়েব সিরিজের বিতর্কিত অংশ বাদ দিতে সংশ্লিষ্টদের একটি আইনি নোটিশ দিয়েছিলেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ। সে নোটিশের কোনো জবাব না পেয়ে তিনি হাইকোর্টে রিট করেন।

এমএইচডি/জেডএস