স্বাস্থ্য অধিদফতরের গাড়িচালক আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। রায় শুনে আদালতের বারান্দায় আহাজারি শুরু করেন স্বজনরা। কোনোভাবেই তারা এ রায় মেনে নিতে পারছেন না। তাদের দাবি, মামলাটি মিথ্যা। মিথ্যা মামলায় তাকে (মালেক) সাজা হয়েছে।

মালেকের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে দায়ের করা মামলায় পৃথক দুটি ধারায় ১৫ বছর করে ৩০ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক রবিউল আলম এ রায় ঘোষণা করেন। দুটি ধারার সাজা একসঙ্গে কার্যকর হবে বলে রায়ে বলা হয়।

আদালতের রায় শুনে গাড়িচালক মালেকের বোন বলেন, আমার ভাই নির্দোষ। আমার ভাইকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। আমার ভাইয়ের সঙ্গে আমাদেরও কারাগারে নিয়ে যান।

মালেকের মা আয়েশা বেগমের দাবি, তার বাসায় অস্ত্র ও মাদক কিছুই পায়নি। পুলিশ বাসায় কিছু একটা উল্টিয়ে বলেন, তার বাসা জাল টাকা আছে। এরপর আবার কোথায় একটা ফোন দিয়ে বলেন, বাসায় অস্ত্র পাওয়া গেছে। আমার ছেলের বাসায় কিছুই পায়নি তারা।

এর আগে গত ১৩ সেপ্টেম্বর উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আদালত।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ গত ১১ মার্চ আব্দুল মালেকের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলায় অভিযোগ গঠন করেন। চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মেহেদী হাসান চৌধুরী মালেককে একমাত্র আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তুরাগ থানার কামারপাড়ার ৪২ নম্বর বামনেরটেক হাজি কমপ্লেক্সের তৃতীয় তলার বাসা থেকে আব্দুল মালেককে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের ড্রাইভার আব্দুল মালেক ওরফে বাদল ডিজির গাড়ির ড্রাইভার। এছাড়া বাংলাদেশ সরকারি গাড়ি চালক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের কর্মচারী সমিতির সভাপতি হিসেবে প্রায় ২০-২৫ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কর্মস্থলে খুবই প্রভাবশালী তিনি। দীর্ঘদিন জাল টাকার ব্যবসাসহ নিজ কর্মস্থলে সাংগঠনিক পদবি কাজে লাগিয়ে বদলি ও নিয়োগ বাণিজ্য করে অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হন।

মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর র‍্যাব-১ আব্দুল মালেকের বাসায় অভিযান চালিয়ে একটি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও এক লাখ ৫০ হাজার জাল টাকা উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ওইদিনই রাজধানীর তুরাগ থানায়‌ র‍্যাব-১ এর পরিদর্শক আলমগীর হোসেন অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করেন।

টিএইচ/এসএসএইচ