সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণের জন্য কক্সবাজারে সংরক্ষিত বনভূমির ৭০০ একর জায়গা বরাদ্দের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনে সাড়া দেননি চেম্বার আদালত।

সোমবার (১ নভেম্বর) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত না করে বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দিয়েছেন। আগামী ২১ নভেম্বর আপিল বিভাগে এ বিষয়ে শুনানি হবে। এর ফলে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণের জন্য কক্সবাজারে সংরক্ষিত বনভূমির ৭০০ একর জায়গা বরাদ্দের সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিতই থাকছে। 

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী অ্যাডভোকেট শেখ মনিরুজ্জামান কবির।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।

এর আগে গত ১১ অক্টোবর সংরক্ষিত বনভূমির ৭০০ একর জায়গা বরাদ্দ স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই বরাদ্দ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।

এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিঞা ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান কবির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

গত ৫ সেপ্টেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘৭০০ একর বনভূমি প্রশাসন একাডেমির জন্য বরাদ্দ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য আরেকটি প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণ করতে ‘সংরক্ষিত বনভূমি’র ৭০০ একর জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন ঝিলংজা বনভূমির ওই এলাকা প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন। বন বিভাগ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির আপত্তি উপেক্ষা করে ভূমি মন্ত্রণালয় ওই জমি বরাদ্দ দেয়। বন বিভাগের দাবি, এই জমি তাদের। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই জমি বরাদ্দ নিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে। 

ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট আবেদন দাখিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শেখ মো. মনিরুজ্জামান কবির।

শুনানিতে তিনি বলেন, ৭০০ একর বনভূমির মালিক বন বিভাগ। তাদের আপত্তি উপেক্ষা করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে এ ভূমি বরাদ্দ দিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।বলেন, প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা রক্ষার জন্য দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায় রয়েছে। সেখানে সরকারের একটি বিভাগ ৭০০ একর বনভূমি ধ্বংস করে সেখানে প্রশিক্ষণ একাডেমি নির্মাণের জন্য এই জমি বরাদ্দ নিয়েছে। যদি এখানে একাডেমি করা হয় তাহলে ভয়াবহ পরিবেশগত বিপর্যয় নেমে আসবে।

শুনানি শেষে হাইকোর্ট বনভূমি বরাদ্দ তিন মাসের জন্য স্থগিত করে রুল জারি করেন।

এমএইচডি/জেডএস/জেএস