রংপুরের হারাগাছে পুলিশের বিরুদ্ধে তাজুল ইসলাম (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার অভিযোগের বিস্তারিত বর্ণনা ও ওই ঘটনায় কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, এ বিষয়ে মহানগর পুলিশ কমিশনারের প্রতিবেদন হাইকোর্টে এসেছে। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্তের ই-মেইলে রংপুর পুলিশ কমিশনারের পক্ষে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ এ প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন।

বুধবার (৩ নভেম্বর) বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি শেষে আদেশ দেবেন। 

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত ঢাকা পোস্ট বলেন, রংপুরের পুলিশের পাঠানো প্রতিবেদন দেখে আদালত পরবর্তী আদেশ দেবেন।

এর আগে মঙ্গলবার (২ নভেম্বর) রংপুরের পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত ঘটনা এবং এ ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা আদালতকে জানাতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্তকে বলেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।

ঘটনাটি আদালতের নজরে আনেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। তিনি একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত পুলিশি নির্যাতনে তাজুল ইসলাম মৃত্যু নিয়ে প্রতিবেদন পড়ে শোনান।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশ গুপ্ত ঢাকা পোস্টকে বলেন, ব্যারিস্টার জ্যোর্তিময় পুলিশি নির্যাতনে তাজুল ইসলাম মৃত্যুর ঘটনা আদালতে নজরে এনে বলেন, এটা এতই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা আপনারা দায়ীদের বিরুদ্ধে স্বপ্রণোদিত আদেশ দিতে পারেন। কারণ  সংবিধানে প্রত্যেকটা নাগরিকের বেঁচে থাকার অধিকার আছে। তারপরও কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। সব্বোর্চ আদালতকে এ ধরনের ঘটনায় হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা হাইকোর্ট দিয়েছে।

অমিত দাশ গুপ্ত আরও বলেন, আদালতের আদেশ মতে এরই মধ্যে রংপুর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আদালতের আদেশের কথা জানিয়েছি। আশাকরি রাতের মধ্যে এঘটনার সার্বিক বিষয় তারা আমাকে জানাবেন। আমি কালকে তা আদালতে উপস্থাপন করব।

গত সোমবার (১ নভেম্বর) রংপুরের হারাগাছে পুলিশের বিরুদ্ধে তাজুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে হারাগাছের নতুন বাজার বছি বানিয়ার তেপতি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তাজুল ইসলাম উপজেলার হারাগাছ নয়াটারী দালালহাট গ্রামের বাসিন্দা।

জানা গেছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নয়া বাজার বছি বানিয়ার তেপতি থেকে তাজুল ইসলামকে মাদকসহ আটক করে পুলিশ। এ সময় তিনি পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে পালানোর চেষ্টা করেন। পুলিশ তাকে মারধর করলে ঘটনাস্থলেই মারা যান তাজুল ইসলাম। পরে ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে থানা ঘেরাও করেন। বিক্ষুব্ধ জনতা ইটপাকটেল ছুঁড়ে মারার পাশাপাশি পুলিশের গাড়িসহ বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এমএইচডি/জেডএস