বর্তমান সময়ে অর্থপাচারকে ‘গুরুতর অপরাধ’(সিরিয়াস অফেন্স) বলে মন্তব্য করেছেন আপিল বিভাগ।

ঢাকা ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের তৎকালীন সেক্রেটারি জয় গোপাল সরকারকে চার মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বাতিলের লিখিত আদেশে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আপিল বিভাগ এ মন্তব্য করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) এ আদেশ প্রকাশিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

এর আগে ২ নভেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার রাজধানীর ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জয় গোপাল সরকারকে পৃথক চার মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বাতিল করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে চার মামলা এক বছরের মধ্যে নিস্পত্তি করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ। জয় গোপালের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির।

এর আগে ১৮ আগস্ট ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার রাজধানীর ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জয় গোপাল সরকারকে পৃথক চার মামলায় জামিন দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও  বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওইদিন এ রায় দেন।

ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর গেন্ডারিয়ায় এনু-রুপনের বাড়িতে অভিযান চালায় র‌্যাব। তাদের বাসায় টয়লেটে স্বর্ণের কমোড পাওয়া যায়। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার জব্দ করা হয়। এরপর ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কর্মচারী আবুল কালাম ও এনুর বন্ধু হারুন অর রশিদের বাসায় অভিযান চালানো হয়। ওই অভিযানে ৫ কোটি ৫ লাখ টাকা, ৮ কেজি স্বর্ণালঙ্কার ও ৬টি আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করে র‌্যাব। 

এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি এনু ও রুপনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাদের জবানবন্দিতে জয় গোপাল সরকারের নাম উঠে আসায় তাকে গতবছরের ১৪ জুলাই গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে ২০১৯ সালে গেন্ডারিয়া, সূত্রাপুর ও ওয়ারী থানায় করা পৃথক চার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। 

গেন্ডারিয়া থানায় ২০১৯ সালের ২৫ মে একটি (মামলা নম্বর ২৮), সূত্রাপুর থানায় ২৬ সেপ্টেম্বর দুটি (মামলা নম্বর ২৭ ও ২৯) এবং ওয়ারী থানায় ২৫ সেপ্টেম্বর একটি (মামলা নম্বর ৩৪) মামলা করা হয়। গতবছরের ২২ জুলাই এসব মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করে সিআইডি। গেন্ডারিয়া থানার মামলায় ১৬ জন, সূত্রাপুরের দুটি মামলায় ১৫ ও ১০ জন করে এবং ওয়ারী থানার মামলায় ১১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, জয় গোপাল ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের একজন ফুটবলার ছিলেন। অবসরে গিয়ে পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, পরে ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সালে ক্লাবটির সাধারণ সম্পাদক হয়ে এনু-রুপনের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন এবং ক্লাবে ক্যাসিনো পরিচালনায় প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করেন।

এমএইচডি/এসএম