গোপাল সূত্রধরের ফেসবুক থেকে সংগৃহীত ছবি

রাজধানীর গুলশান থানার নর্দ্দা এলাকায় বাসচাপায় বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল ৭১ টেলিভিশনের ভিডিও এডিটর গোপাল সূত্রধর (৩৪) নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বাস চালকের সহকারী মামুন হাওলাদার দোষ স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাস তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এদিন মামুনকে এক দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বেলাল হোসেন। এরপর আসামি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন এ তদন্ত কর্মকর্তা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

শনিবার (২৯ জানুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মইনুল ইসলাম তার এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ২৮ জানুয়ারি দিবাগত রাতে ঝালকাঠির নলছটি এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আগের দিন ২৭ জানুয়ারি গুলশান থানায় সড়ক পরিবহন আইনে মামলাটি করেন নিহতের বড় ভাই দুলাল সূত্রধর (৪২)। মামলার এজাহারে ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের এক বাসের বেপরোয়া গতির কারণে তার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করেন দুলাল সূত্রধর। তিনি বলেন, ভিক্টর ক্লাসিকের বেপরোয়া গতি আমার ভাইয়ের জীবন কেড়ে নিয়েছে।

মামলার এজাহারে দুলাল সূত্রধর অভিযোগ করে বলেন, ৭১ টিভিতে ভিডিও এডিটর হিসেবে কর্মরত গোপাল সূত্রধর বুধবার বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটের দিকে অফিস থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বিকেল আনুমানিক ৪টা ৩০ মিনিটের দিকে গুলশান থানার নর্দ্দা এলাকার সিয়াম হার্ডওয়্যারের দোকানের সামনে পৌঁছালে তার মোটরসাইকেলকে পেছন থেকে বেপরোয়া গতিতে আসা ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের একটি বাস ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে গিয়ে বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে গুরুতর আহত হয় গোপাল সূত্রধর।

পরে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে বারিধারা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চিকিৎসকরা তাকে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী গোপালকে পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি এজাহারে আরও অভিযোগ করে বলেন, ভিক্টর ক্লাসিক পরিবহনের ‘ঢাকা মেট্রো-ব ১৫-৪৫০০’ নম্বরের বাসটিকে বেপরোয়া গতিতে চালক ও হেলপার চালাচ্ছিল। এ সময় তারা আমার ভাইয়ের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এ কারণেই আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০১৪ সালে গোপাল সূত্রধর ৭১ টেলিভিশনে ভিডিও এডিটর হিসেবে যোগ দেন। এর আগে তিনি বেসরকারি টিভি ইন্ডিপেনডেন্টে কাজ করতেন। তিনি তার এক সহকর্মীর সঙ্গে খিলক্ষেতে একটি মেসে থাকতেন। তার স্ত্রী লক্ষ্মী সূত্রধর দুই সন্তান নিয়ে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার ভদ্র গ্রামে থাকেন। তিন ভাইবোনের মধ্যে গোপাল সবার ছোট।

টিএইচ/জেডএস