পি কে হালদারের প্রধান সহযোগী রাশেদুল হক

অর্থআত্মসাৎ ও পাচারসহ বিভিন্ন প্রতারণার অভিযোগে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া আলোচিত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের প্রধান সহযোগী ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাশেদুল হক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বাকী বিল্লাহ এ জবানবন্দি গ্রহণ করেন। জবানবন্দি নেওয়া শেষ হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদালতের সংশ্লিষ্ট দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শাখার কর্মকর্তা জুলফিকার আলী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, এ দিন দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করেন। একইসঙ্গে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে সম্মত হওয়ায় তা রেকর্ড করার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।

এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি ঢাকার সিনিয়র স্পেশাল জজ এ কে এম ইমরুল কায়েশ তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত ২৪ জানুয়ারি বিকেলে সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ারের নেতৃত্বে একটি টিম তাকে গ্রেপ্তার করে। তার বিরুদ্ধে ৭০ কোটি ৮২ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত ৮ জানুয়ারি ২৭৪ কোটি ৯১ লাখ ৫৫ হাজার ২৫৫ টাকার অবৈধ সম্পদের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন কমিশনের সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী।

অভিযোগ রয়েছে, পি কে হালদার ওই প্রতিষ্ঠানসহ পিপলস লিজিং, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানির (বিআইএফসি) দায়িত্ব পালন করে প্রায় তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করেছেন।

ক্যাসিনো অভিযানের ধারাবাহিকতায় এরই মধ্যে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের পরপরই তার নাম উঠে আসে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ২০২০ সালের ১৪ নভেম্বর হাজির হতে নোটিশ দিয়েছিল সংস্থাটি।

তার আগে ৩ অক্টোবর তার বিদেশযাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি ঠিকই দেশ থেকে পালিয়ে যান। পরে দেশে আসার কথা বলেও আর আসেননি। গত ৮ জানুয়ারি দুদকের অনুরোধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দিয়ে রেড অ্যালার্ট জারি করে ইন্টারপোল। 

পি কে হালদারের প্রতারণায় সহায়তাকারী ২৪ জনের বিদেশগমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। আর দুদক এখন পর্যন্ত সহযোগী হিসাবে ৬২ জনকে শনাক্ত করেছে। 

টিএইচ/এফআর