অর্থপাচার মামলা বিচারের জন্য বিদ্যমান আইনে সাজার অপ্রতুলতার বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট। বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ প্রশ্ন তোলেন। 

চট্টগ্রামের বিসমিল্লাহ গ্রুপের অর্থপাচার মামলার আসামির জামিন শুনানিকালে আদালত বলেন, আইনে (মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২) সাজার পরিমাণ অনেক কম। এ ধরনের গুরুতর অপরাধের মামলার বিচারের জন্য আইনে যাবজ্জীবন সাজার বিধান রাখা দরকার ছিল। লঘুদণ্ড দিয়ে অর্থপাচারের মতো দুর্নীতি রোধ করা যাবে না। প্রয়োজনে আইন সংশোধন করে সাজার পরিমাণ বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, বিসমিল্লাহ গ্রুপের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলায় গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খাজা সোলেমান আনোয়ার চৌধুরী, তার স্ত্রী ও গ্রুপের চেয়ারম্যান নওরীন হাবিবসহ ৯ জনকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ আদালত। একইসঙ্গে ৩০ কোটি ৬৭ লাখ টাকার অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এ রায় ঘোষণা করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক আতাবুল্লাহ। এই মামলার আরেক আসামি জনতা ব্যাংক এলিফ্যান্ট রোড শাখার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার এসএম শোয়েব উল কবিরের ১০ বছর সাজা হয়। এরপর আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠান বিশেষ আদালত। কারাগার থেকে সাজার বিরুদ্ধে আপিল করেন তিনি। এরপর তিনি হাইকোর্টে জামিন চান।

আসামির জামিন শুনানিতে দুদকের আইনজীবী ব্যারিস্টার হাসান এমএস আজিম বলেন, ‘এই অর্থপাচারের ঘটনায় সহযোগিতা করেছেন ওই ব্যাংক কর্মকর্তা। তাকে বিচারিক আদালত ১০ বছরের সাজা দিয়েছেন।’ এ পর্যায়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘এই মামলায় আসামিদের ১০ বছর সাজা কম হয়ে গেছে। অর্থপাচারের মতো গুরুতর অপরাধে যাবজ্জীবন সাজা দিতে হবে। আইনে সর্বোচ্চ সাজার পরিমাণ কত?’

তখন দুদক আইনজীবী বলেন, ‘সর্বোচ্চ সাজা ১২ বছর। জ্যেষ্ঠ বিচারপতি বলেন, ১২ বছর সাজা সেখান থেকে আবার দেওয়া হয়েছে ১০ বছর। এজন্য আইন সংশোধন করে সাজার পরিমাণ বাড়াতে হবে।’

এমএইচডি/এইচকে