পুরুষের চেয়ে নারীর শরীরে হরমোনের রদবদল বেশি হয়ে থাকে। মেনস্ট্রুয়েশন, সন্তান জন্ম দেওয়া, মেনোপজ ইত্যাদি সময় হরমোনের তারতম্য খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, হরমোনের পরিবর্তন হলেই শরীরে তার প্রভাব পড়ে কি না। কারণ এর কম কিংবা বেশি হলে সেটি অবহেলা করা ঠিক নয়, এতে হতে পারে নানা সমস্যা।

আমাদের শরীর সেভাবেই চলে, যেভাবে আমরা চালনা করি। শুধু খাবারই নয়, সেইসঙ্গে মানসিক চাপসহ আরও অনেক সমস্যার প্রভাব পড়ে আমাদের শরীরে। একেক হরমোনের পরিবর্তনে একেক ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। হরমোনের প্রভাবে নারীর শরীরে কোন সমস্যাগুলো হতে পারে তা জেনে নিন-

নারীর শরীরে সাধারণত, ইস্ট্রোজেন, প্রলাক্টিন, টেস্টাস্টরেন, প্রজেস্টেরন, এলএইচ তথা এফেসেইচ এর মাত্রা হ্রাস বৃদ্ধির কারণে শরীর নানাভাবে প্রভাব ফেলে। ইস্ট্রোজেন নামক হরমোন নারীর শরীরে প্রজননের মাত্রা ধরে রাখে। এটি নারীর দৈহিক গঠন ভালো করে, হাড়ের শক্তি এবং পেশীর সক্রিয়তা নির্ভর করে এর ওপরেই।

নারীর মাসিক ঋতুচক্র সঠিক রাখে প্রজেস্টেরন নামক হরমোন। এটি নারীর নার্ভের অসুস্থতা কমায়, সেইসঙ্গে ঠিক রাখে ঘুমের মাত্রাও। টেস্টাস্টরেন নামক হরমোন নারীর কোষগুলোকে সক্রিয় রাখে, দৈহিক বিকাশ ঘটায় এবং প্রজননে সাহায্য করে। ব্রেস্ট টিস্যু সঠিক মাত্রায় রাখে যে হরমোন তার নাম হলো প্রল্যাকটিন। সন্তান জন্মের পর ল্যাকটেশনে সাহায্য করে এই হরমোন।

নারীর শরীরে হরমোনগুলোর মাত্রা বেশি থাকলে কী হয়?

নারীর শরীরে ইস্ট্রোজেন যদি বেশিমাত্রায় থাকে তবে ওজন বৃদ্ধি এবং ঋতুচক্রে সমস্যা দেখা দেয়। এই হরমোন কম মাত্রায় থাকলে হাড়ের ক্ষয় হয় এবং সন্তান ধারণে সমস্যা হতে পারে।

প্রজেস্টেরন বেশি মাত্রায় থাকলে হজমে সমস্যা, ক্ষুধা না পাওয়া, বুকের ওপরে অংশে ফোলাভাব, উদ্বেগ এবং ওজন বৃদ্ধি পায়। এই হরমোন কম মাত্রায় থাকলে তা মাথা ব্যাথা, মেজাজ গরম এবং ডিম্বাণুর বিকাশ না হওয়ার কারণ হতে পারে।

টেস্টাস্টেরন বেশি থাকলে মুখমণ্ডলে অত্যধিক পশম হতে পারে, চুল ঝরে মাথায় টাক পড়ে যায়। গালে ব্রণ এবং মুখে লাল দাগ দেখা দেয়। টেস্টাস্টেরন হরমোন কম থাকলে তা মেজাজ খারাপ, দুর্বল হাড়, স্মৃতি কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে।

প্রোল্যাকটিন বেশি মাত্রায় থাকলে ডিম্বাণুর নিষেক হার কমে যায়। মাসিকের অনিয়ম, ব্রণ হতে পারে এবং শরীর শুকিয়ে যেতে পারে। কম থাকলে মায়েদের মিল্ক প্রোডাকশন কমে যায়, মাসিকের গরমিল দেখা দেয়।