অনিদ্রার সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। ঘুম না এলে শুধু এপাশ ওপাশ করে অনেকের সারারাত কেটে যায়। অনিদ্রা বা ইনসোমনিয়ার কারণে অনেকে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। কাজে মনোযোগ কমে যায়। ব্যক্তির আচরণ ও বয়সের তারতম্য অনুযায়ী ইনসমনিয়া দুইভাবে হয়ে থাকে। শর্ট টার্ম ইনসোমনিয়া বা সংক্ষিপ্ত সময়ের ইনসোমনিয়া এবং ক্রোনিক ইনসোমনিয়া বা দীর্ঘমেয়াদী ইনসোমনিয়া। হতাশা, ক্লান্তি থেকে অনিদ্রা বা ইনসোমনিয়ার সমস্যা হয়ে থাকে। প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসকের কাছে গেলে সহজেই ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রার সমস্যা দূর করা যায়।

রক্ত পরীক্ষা করুন

অনিদ্রার সমস্যার জন্য চিকিৎসকরা বেশিরভাগ সময় রক্ত পরীক্ষা করতে বলেন। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ সম্পর্কে জানা যায়। ঘুমের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক অনেক শক্তিশালী। একজন স্বাভাবিক মানুষের রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ডেসিলিটারে ১৫ থেকে ১৪ গ্রাম থাকে। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে অনিদ্রা সমস্যা সম্পর্কে জানা যায়।

ঘুমানোর আগে নোটবুকে লিখে রাখুন

কখন ঘুমাতে যাচ্ছেন আর কখন ঘুম থেকে জেগে উঠছেন সেটি একটি নোটবুকে লিখে রাখলে অনিদ্রা সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। ঘুমানোর সময় আপনার অনুভূতি কেমন সেটিও লিখে রাখতে পারেন। এক থেকে দুই সপ্তাহ নোটবুকে ঘুমানো ও ঘুম থেকে জাগার সময় লিখে রাখলে অনিদ্রার সমস্যা দূর হয়ে যাবে।

স্লিপ স্টাডি করুন

যদি চিকিৎসক স্লিপ স্টাডি করার প্রয়োজন মনে করেন তাহলে স্লিপ স্টাডি করবেন। এতে অনিদ্রার ক্ষেত্রে মূল সমস্যা সম্পর্কে জানা যায়। স্লিপ স্টাডি হলো ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় হার্টবিটসহ শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলো কীভাবে চলে সেই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া।

অনিদ্রা হলে যেসব খাবার খাবেন:

কিছু খাবার আছে যা আপনাকে ঘুম না আসার সমস্যা থেকে বাঁচাতে পারে। ঘুমের সহায়ক সেসব খাবার নিয়মিত খেলে দূর হবে অনিদ্রা। চলুন জেনে নেয়া যাক সেই খাবারগুলো সম্পর্কে-

মধু

মধুর অসংখ্য ঔষধি গুণের মধ্যে অন্যতম গুণ এটি অনিদ্রা দূর করতে পারে। ঘুমাতে যাওয়ার আধা ঘণ্টা আগে চা বা গরম দুধের সঙ্গে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে নিলে উপকার পাওয়া যেতে পারে। মধু খেলে রাতে ভালো ঘুম হয়।

বাদাম

অনিদ্রা দূর করতে কার্যকরী খাবার বাদাম। বাদাম শরীরে সেরোটোনিন হরমোনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে। সেরোটোনিন হরমোন শরীরে সুখের অনুভূতি তৈরি করে। বাদামে রয়েছে ট্রাইপটোফ্যান ও ম্যাগনেসিয়াম। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১০-১৫টি বাদাম খেলে রাতে ভালো ঘুম হবে।

দই

দুধজাতীয় খাবার হিসেবে দইয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। এই উপাদান ঘুম আনতে সহায়তাকারী ট্রাইটোফ্যান ও মেলাটোনিন হরমোন বাড়াতে সাহায্য করে। তাই রাতে ঘুমানোর আগে দই খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে রাতে ভালো ঘুম হয়।

কলা

কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। মানুষের শরীরে পটাশিয়ামের উপস্থিতি, রাতে ঘুম কতটা গাঢ় হবে সেটি নিয়ন্ত্রণ করে। তাছাড়া নিয়মিত কলা খেয়ে ঘুমালে রাতে ভালো ঘুম হয়ে থাকে।

এইচএকে/এইচএন/এএ